৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ ১০:৩৪

এক গ্রামের মাঠে কয়েক কোটি টাকার নিরাপদ শসা

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা:

এক গ্রামের মাঠে কয়েক কোটি টাকার নিরাপদ শসা

কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার মুগুজি গ্রামের মাঠে ৬ কোটি টাকার নিরাপদ শসা চাষ হচ্ছে! গত বছর এই মাঠে সাড়ে চার কোটি টাকার শসা বিক্রি হয়। এবার কীটনাশকমুক্ত পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে চাষ করায় বেড়েছে শসার আকার। বেশি দাম পাবেন কৃষকরা। এই শসা মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন বিদেশেও রপ্তানি হয় বলে জানান কৃষি কর্মকর্তারা।

গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের দুই পাশের ৩৫ হেক্টর জমিতে শসার চাষ হয়েছে। যেদিকে চোখ যায় সেখানে সবুজ আর সবুজ। কোথাও শসার হলুদ ফুল মাথা উঁকি দিয়ে আগমনী বার্তা জানান দিচ্ছে। কোথাও বাতাসে দুলছে কচি শসা। শসার মাচার ওপর বর্ণিল রঙ দিয়েছে হলুদ ও নীল পাতার পোকা মারার ফাঁদ। সাথে রয়েছে কিউট্রেক ও সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ। পোকা দমনে ব্যবহার করা হয় পাতা-লতার রস। 

মুগুজি গ্রামে শনিবার নিরাপদ শসা ও সবজি চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে কৃষক সমাবেশ ও মাঠ পরিদর্শন করেন কৃষি কর্মকর্তারা। তারা হচ্ছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক (সরেজমিন উইং) মো. তাজুল ইসলাম,কুমিল্লা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মোহিত কুমার দে, কুমিল্লা জেলার উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান, জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন হোসেন, নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের পরিচালক মো.সালাহ উদ্দিন সরদার, খামারবাড়ির উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা উইং) শাকিল আরভিন ঝুমু, বরুড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মো. নজরুল ইসলাম ও বুড়িচং উপজেলা কৃষি অফিসার বানিন রায় প্রমুখ।

স্থানীয় কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শসা চাষে ১০ গন্ডায় এক লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। ৩ লক্ষ টাকা বিক্রি হবে। বিষমুক্ত উপায়ে চাষ করায় ক্রেতাদের চাহিদা বেড়ে গেছে।

মনির হোসেন, সাহাব উদ্দিন ও সফিকুল ইসলাম বলেন, ৬ গন্ডায় খরচ হয়েছে ৭০ হাজার। বিক্রি হবে দেড় লক্ষ টাকা। সরাসরি বিদেশে রপ্তানি করতে পারলে আমাদের আয়ও বাড়বে। বিষমুক্ত শসার উৎপাদনে কৃষি অফিস উদ্বুদ্ধ করেছে। আশা করছি ভালো ফলন হবে। 

উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বরুড়ার খোশবাস ইউনিয়নের মুগুজি গ্রামে ২৫-৩০ বছর ধরে কৃষকরা শসা উৎপাদন করেন। এখানের ৫০০ জন কৃষককে বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি ও শসা উৎপাদনে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমরা এইখানে নিরাপদ শসা উৎপাদনে উদ্যোগ নিয়েছি। এখানের শসা স্থানীয় চাহিদা মেটানোর সাথে বিদেশে রপ্তানি করা যাবে। আশা এই প্রযুক্তি কুমিল্লাসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে।

কুমিল্লা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মোহিত কুমার দে বলেন, নিরাপদ সবজি চাষ বিষয়টি এখানে কৃষকরা প্রশংসনীয়ভাবে আত্মস্ত করেছেন। আমরা এই অগ্রগতি ধরে রাখবো। এটি আরো ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছি।
 
পরিচালক (সরেজমিন উইং) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, এরকম দেশের ২০টি ইউনিয়নে এই নিরাপদ শসা চাষের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। তার একটি বরুড়ার খোশবাস দক্ষিণ ইউনিয়ন। খরপোষ থেকে আমরা বাণিজ্যিক কৃষিতে এসেছি। কৃষি পণ্য বিদেশে রপ্তানির জন্য তাদের কিছু শর্ত থাকে। আমরা তা পূরণের চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে রপ্তানিকারকরা আসা শুরু করেছেন। 

বিডি প্রতিদিন/এএম

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর