পানিফল চাষে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন বগুড়ার কৃষকরা। অল্প পুঁজি ব্যয় করে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন পানিফল চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষীদের। জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য জেলাগুলোতেও বিক্রি করা হচ্ছে এ ফল। বগুড়ার খাল-বিল জলাশয়জুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে পানিফলের গাছ।
বগুড়া শহর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার পূর্বে দোবিলা বিলে পানিফলের চাষ করছেন স্থানীয় চাষীরা। এছাড়া জেলার গাবতলী, নন্দীগ্রাম, সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় পানিফল উৎপাদনে সফলতা পাওয়ায় চাষিরা অনুপ্রাণিত হয়ে কৃষি অফিস থেকে চাষাবাদ পদ্ধতি শিখে পতিত জমিতে পানিফল চাষ করেছেন। নিচু পতিত জমি এবং বিল-জলাশয়ে মৌসুমি ফসল হিসেবে পানিফল চাষ হচ্ছে। স্বল্প খরচে অনেকটা লাভবান হওয়ার আশায় কৃষকদের মাছে আগ্রহ বেড়ে গেছে পানিফল চাষের। চাষও যেমন বাড়ছে তেমিন বাজারে এই ফলের দামও ভালো। আর ভালো দাম পেয়ে কৃষরাও খুশি।
কৃষকরা জানান, গেল বছরের তুলনায় এ বছর বগুড়ায় পানিফলের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি বিঘায় ১৫ থেকে ২০ মণ ফল হচ্ছে। বিঘাপ্রতি ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি মণ ৬’শ থেকে ৮’শ টাকা দরে কেনাবেচা হয়ে থাকে। তবে মৌসুমের শুরুতে দাম ভালো পাওয়া যায়।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা য়ায়, গত বছর জেলায় ৪১ হেক্টর জমিতে পানিফল চাষ হয়েছে। চলতি বছরেও একই পরিমান জমিতে পানি ফল চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যা থেকে ১ হাজার ২৩০ মেট্রিকটন ফল উৎপাদন হবে। এ পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ৩০ হেক্টর জমি। কর্তন হয়েছে ৮ হেক্টর জমি। জেলার গাবতলী, নন্দীগ্রাম, সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় পানিফল চাষ হয়ে থাকে।
বগুড়া সদরে সামগ্রাম দক্ষিণপাড়ার পানিফল চাষী আব্দুর রহিম, আনছার আলী, মুসা ও শফিকুল ইসলাম জানান, তারা ৪ জনে মিলে দোবিলা বিলে ১৫ বিঘা জমিতে পানিফলের চাষ করেছেন। ১৫ বিঘা জমিতে তাদের খরচ হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। ১ থেকে দেড় মাসে এখান থেকে তারা প্রায় দুই লাখ টাকার ফল বিক্রি করতে পারবেন। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ মন করে পানি ফল বাজারে বিক্রি করেন। পাইকারি বাজারে প্রতি মন পানিফল বিক্রি করেন ৬’শ থেকে ৭’শ টাকা।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারি কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম ফরিদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, গত বছর জেলায় ৪১ হেক্টর জমিতে পানিফল চাষ হয়েছে। চলতি বছরেও একই পরিমাণ জমিতে পানি ফল চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যা থেকে ১ হাজার ২৩০ মেট্রিকটন ফল উৎপাদন হবে। এ পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ৩০ হেক্টর জমি। কর্তন হয়েছে ৮ হেক্টর জমি। জেলায় এর চাষাবাদ বেড়ে গেছে। অন্য ফসলের চেয়ে পানিফল চাষে কষ্ট কম হয়। কীটনাশক ও সার কম ব্যবহার হওয়ায় এটি পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাবার। পানিফল শিশু থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধরাও খেতে পছন্দ করেন। আর খেতে সুস্বাদু ও মিষ্টি হওয়ায় চাহিদাও বেশি। এটি আঁশ জাতীয় খাবার। মানবদেহেন জন্য খুবই উপকারী এই ফল।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন