পিয়াজ আবাদের শীর্ষ জেলাগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় হচ্ছে ফরিদপুর। দেশে উৎপাদিত পিয়াজের সিংহভাগ যোগান দেয়া হয় এ জেলা থেকে। ফলে প্রতি বছর নভেম্বর-ডিসেম্বর এলেই নানা প্রজাতির পিয়াজ রোপণে ব্যস্ত সময় পার করেন কৃষকরা।
গত কয়েক বছর ধরে পিয়াজের দাম ভালো পাবার কারণে এ জেলায় কৃষকরা অধিক পরিমাণ জমিতে পিয়াজ আবাদ করছেন। এ বছর ফরিদপুর জেলায় রেকর্ড পরিমান জমিতে পিয়াজ আবাদ করা হচ্ছে। জেলার নয়টি উপজেলার বিস্তির্ণ এলাকার মাঠজুড়ে বর্তমানে কৃষকরা হালি ও মুড়িকাটা পিয়াজ রোপণের কাজ করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ৪৩ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে পিয়াজের আবাদ করা হচ্ছে। যা গত বছরের তুলনায় বেশী। এরমধ্যে মুড়িকাটা পিয়াজ ৫ হাজার ৩শ হেক্টর জমিতে, হালি পিয়াজ ৩৬ হাজার ১শ ৪০ হেক্টর জমিতে রোপণের কাজ চলছে। এছাড়া ১ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে দানা পিয়াজ রোপণ শুরু হয়েছে।
সরেজমিন নগরকান্দা ও সালথার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পিয়াজ রোপণে ব্যস্ত সময় পার করেছেন চাষিরা। সালথা উপজেলার গট্রি ইউনিয়নের চাষি হাফেজ মোল্যা বলেন, পিয়াজের দাম ভালো পাওয়ায় এবছর অধিক সংখ্যক কৃষক পিয়াজ চাষে ঝুঁকেছেন। প্রতিদিন ভোর থেকে পিয়াজের চারা উত্তোলনের পর জমিতে রোপণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এবার শ্রমিক ও সার, সেচের খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। তবে এ বছর যে দামে পিয়াজ বিক্রি হয়েছে তা বজায় থাকলে কৃষক লাভবান হবে। আরেক চাষি দলিলউদ্দিন শেখ জানান, এবার পিয়াজ উৎপাদনে খরচ বেড়েছে বহু গুণে। সরকার যদি কৃষকদের প্রনোদনার মাধ্যমে সার, ডিজেল দিয়ে সহযোগীতা করতো তাহলে আমরা কম দামে পিয়াজ বিক্রি করতে পারতাম।
পিয়াজ বীজ চাষি ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুরের সাহিদা বেগম জানান, তিনি প্রতি বছর পিয়াজের দানা উৎপাদন করে থাকেন। গত বছর পিয়াজের দানার দাম ভালো পাওয়া গেছে। তাই এ বছর বেশী জমিতে তিনি দানার জন্য পিয়াজ বীজ রোপণ করেছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. শাহাদুজ্জামান জানান, চলতি বছর ফরিদপুরের ৯টি উপজেলায় রেকর্ড পরিমান জমিতে বিভিন্ন ধরণের পিয়াজ রোপণের কাজ চলছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সাড়ে ৫ লাখ মেট্রিক টন পিয়াজ পাওয়া যাবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল