ফরিদপুরে উৎসবের আমেজে বিস্তির্ণ এলাকাজুড়ে পিঁয়াজের চারা রোপণের ধুম পড়েছে। শীত আর কুয়াশাকে উপেক্ষা করে ভোর হতেই কৃষকেরা মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন পিঁয়াজের চারা রোপণে।
সাম্প্রতিক সময়ে পিঁয়াজের ভালো দাম পাওয়ায় অধিক পরিমান জমিতে এ বছর পিঁয়াজ আবাদ করছেন চাষীরা। বিগত কয়েক বছরে লোকসান গুনতে হলেও গত বছর রেকর্ড পরিমান দাম পাওয়ার ফলে নতুন করে আশায় স্বপ্ন বুনছেন পিঁয়াজ চাষীরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার পিঁয়াজ উৎপাদন রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পিঁয়াজের রাজধানী হিসাবে পরিচিত ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ভোর হতেই কাঁচি, কোদাল, লাঙল আর পিঁয়াজের চারা নিয়ে মাঠে যাচ্ছেন কৃষক। মাঠের পর মাঠ বিভিন্ন বয়সী মানুষ রোপণ করছেন পিঁয়াজের চারা-এমন দৃশ্য জেলার বিভিন্ন উপজেলার দিগন্তজোড়া মাঠে। বর্তমানে পিঁয়াজ রোপণের ভরা মৌসুম চলছে ফরিদপুরে। সারিবদ্ধ ভাবে বসে পিঁয়াজের চারা গুলো নিপুন হাতে রোপণে ব্যস্ত সবাই। কেউ কেউ আবার পিঁয়াজের চারা তুলছেন। ফলে নানা বয়সী ও বিভিন্ন পেশার মানুষ বাড়তি আয়ের জন্য কাজ করছেন ক্ষেতে।
স্থানীয় অনেকেই বলছেন, নিজেদের অন্য কাজের পাশাপাশি ভোর হতে দুপুর পর্যন্ত বাড়তি আয়ের জন্য পিঁয়াজ ক্ষেতে কাজ করছেন। ফলে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে ভালোই আছেন। সালথা উপজেলার পেঁয়াজ চাষী পজল মাতুব্বর, আলেপ শেখ জানান, পিঁয়াজ রোপণের ভরা মৌসুম এখন। তাই তারা দম ফেলারও ফুসরত পাচ্ছেন না। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মাঠে এসেছেন পিঁয়াজ রোপণে। নগরকান্দার চাষী সোহরাব বেপারী, সদানন্দ দাস জানান, গত বছর পিঁয়াজের ভালো দাম পাওয়ায় এবার বেশি জমিতে পিঁয়াজ রোপণ করছেন। তবে সার, কিটনাশককের দাম বেশি এবং শ্রমিকদের মুজুরী অনেক বেশি থাকায় খরচ বেশি হয়েছে। গত বছরের মতো পিঁয়াজের দাম না পেলে লোকসানের মধ্যে পড়বেন তারা।
স্থানীয় চাষীরা জানান, গত বছরের তুলনায় এবছর রেকর্ড পরিমান জমিতে পিঁয়াজের আবাদ করছেন তারা। পিঁয়াজের দাম ভালো পাওয়ার কারনেই অন্য ফসল বাদ দিয়ে পিঁয়াজ আবাদে ঝুঁকেছেন। কৃষকেরা বলছেন, এ বছর পিঁয়াজের চারা রোপণ করতে গিয়ে তাদের খরচ অনেকে বেড়েছে। সার, কিটনাশক, ঔষধ, শ্রমিকসহ আনুষাঙ্গিক খরচ বেড়েছে। ফলে পিঁয়াজের ন্যার্য্য মূল্য না পেলে তারা লোকসানের মধ্যে পড়বেন। কৃষকদের দাবি, পিঁয়াজের দাম কমাতে হলে সার, কিটনাশক, ঔষধের দাম আগে কমাতে হবে। এজন্য তারা সরকারের সহযোগীতা কামনা করেন।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় ২ হাজার হেক্টর বেশী জমিতে আবাদ করা হচ্ছে পিঁয়াজ। এ বছর জেলায় পিঁয়াজ রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৩ হাজার ২শ ৬০ হেক্টর জমিতে। যেখান থেকে ৫ লাখ ৮৮ হাজার ৩শ ৩৬ মেট্রিক টন পিঁয়াজ সংগ্রহ করা যাবে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ