চুয়াডাঙ্গায় বিদেশি ফল আঙুর চাষ করে দারুণ সাফল্য পেয়েছেন চাষিরা। বিশেষ করে জীবননগর উপজেলার বেশ কিছু চাষির আঙুর বাগানে চলতি বছর পরিপূর্ণ ফল এসেছে। এ উপজেলায় ৩৫ বিঘা জমিতে কয়েকটি জাতের আঙুর চাষ হয়েছে। অন্তত ৩০০ মণ আঙুর উৎপাদনের আশা করছেন উদ্যোক্তারা।
জীবননগর উপজেলার রায়পুর, মানিকপুর ও হাসাদহ গ্রামের আঙুর বাগানে গিয়ে দেখা যায়, থোকায় থোকায় ঝুলছে আঙুর ফল। এক একটি থোকা দেখে মনে হচ্ছে মাচা ভেঙে পড়বে। মাচার নিরাপত্তায় শক্ত বাঁশ দেওয়া হয়েছে। গাছে ফল আসার পর পাখির উৎপাত ঠেকাতে ফলে থোকা ‘ব্যাগ ইন’ বা ‘নেটিং’ করে রাখা হয়েছে।
রায়পুর গ্রামের চাষি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘প্রায় তিন একর জমিতে আঙুরের চাষ করছি। ২০২২ সাল থেকে আঙুর নিয়ে কাজ করছি।’ দুই বছর থেকে তাদের বাগানে আঙুর ধরছে। এ বছর অনেকটা বেশি ফল এসেছে তাদের আঙুর বাগানে। একটি গাছে ১৫ থেকে ২০ কেজি ফল পাওয়া যাবে বলে জানান।
চাষি আবদুর রহিম জানান, তারা বেশ কিছু আঙুরের জাত নিয়ে কাজ করছেন। তবে ৫-৬টি জাতের আঙুরে বাণিজ্যিক সাফল্য সম্ভাবনা দেখছেন তারা। এর মধ্যে বাইকুনুর, ডিক্সন, অ্যাকোলো, ব্ল্যাক ম্যাজিক ইত্যাদি জাতের আঙুর বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছে। রহিম বলেন, ‘এ বছর আমার বাগানে যে ফল হয়েছে তা বেশ সুমিষ্ট। এ কারণে পাইকারি ক্রেতারা বাগানে এসেই ফল নিয়ে যাচ্ছে।’
আঙুর চাষি হৃদয় হোসেন বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে ২০০ থেকে ৩০০ আঙুর গাছ লাগানো যায়। এতে খরচ হয় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। অন্যদিকে পরিপূর্ণ ফল এলে বিঘায় বছরে চার-পাঁচ লাখ টাকার আঙুর বিক্রি করা সম্ভব। আঙুর গাছে বছরে দুবার ফল হয়। গাছ লাগানোর পর মাচায় উঠলে নিয়মমতো প্রুনিং করে ফলন বাড়ানো হয়। অল্প পরিচর্যাতেই আঙুর চাষ সম্ভব। এ জন্য এ চাষে ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।’
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, ‘কৃষিবিভাগ বরাবরই চুয়াডাঙ্গার চাষিদের ব্যতিক্রমী চাষে উৎসাহ দিয়ে আসছে। সে ধারাবাহিকতায় জেলার বেশ কিছু কৃষক আঙুরের চাষ করছেন। তাদের মধ্যে সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। কিছু কিছু জমিতে মিষ্টি জাতের আঙুর হচ্ছে। যা এ জেলার চাষিদের অনুপ্রাণিত করছে।’
বিডি প্রতিদিন/এমআই