রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিশ্বের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম

বিশ্বের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম

সংবাদ বা খবরের প্রতি মানুষের আগ্রহ চিরাচরিত। এ আগ্রহ মেটায় বিভিন্ন ধরনের সংবাদমাধ্যম ও টেলিভিশন। দৈনিক পত্রিকা, ম্যাগাজিন, টেলিভিশন, অনলাইন নিউজপোর্টাল ও হালের সোশ্যাল সাইট- সবই প্রভাবশালী ভূমিকা রেখে চলেছে খবরের খোরাক জোগাতে। বিশ্বের প্রভাবশালী মিডিয়াগুলোর তালিকায় এদের প্রতিযোগীর সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। প্রতিনিয়তই বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে এদের এগিয়ে যেতে হচ্ছে। হালের সোশ্যাল নেটওয়ার্কও পিছিয়ে নেই। তবে প্রচার সংখ্যা ও পাঠক-দর্শকের আগ্রহের সঙ্গে যোগ হওয়া জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতার বিবেচনায় বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী মিডিয়াগুলোকে নিয়ে প্রতিদিন ডেস্কের এই আয়োজন-

 

 

বাংলাদেশের সর্বাধিক প্রচারিত বাংলা দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন

সরকারি ও বেসরকারি তথ্য মোতাবেক বাংলাদেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন। গত ৩০ জানুয়ারি জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানান, রাজধানী ঢাকা থেকে প্রকাশিত ৫০৯টি দৈনিক পত্রিকার মধ্যে প্রচারণার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। নঈম নিজামের সম্পাদনায় পত্রিকাটির জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। অল্প কথায়, অল্প পাতায়, অল্প পয়সায় বেশি খবরের নতুন ধারণা নিয়ে ২০১০ সালের ১৫ মার্চ যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ প্রতিদিন।  ব্যতিক্রমী পরিবেশনা, বিন্যাস ও বিষয়বস্তুর কারণে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পাঠকের গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হয়। মাত্র ১২ পৃষ্ঠার দৈনিক হয়েও সব ধরনের খবরে সবাইকে অতিক্রম করে শীর্ষে পৌঁছে যায় পত্রিকাটি। মূল পত্রিকার সংবাদ ফিচার ও উপসম্পাদকীয় প্রভৃতি কনটেন্টের বাইরে বিভিন্ন সাপ্লিমেন্ট পাঠকের কাছ থেকে আশাতীত সাড়া পেয়েছে। লন্ডন ও নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ প্রতিদিনের আরও দুটি আলাদা সংস্করণ প্রকাশ হয়। পাশাপাশি অনলাইন পোর্টালেও দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। বিশ্বের ১৮৫টি দেশে অনলাইনে পাঠকরা বাংলাদেশ প্রতিদিন পড়েন।  প্রথম সারির সব সোশ্যাল মিডিয়া ও ডিজিটাল মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিভিন্ন খবর ও আয়োজন নিয়মিত প্রচার হয়ে থাকে।

 

প্রচারসংখ্যায় বিশ্বসেরা

দ্য ইয়োমিউরি শিমবুন

‘দ্য ইয়োমিউরি শিমবুন’। কেবল জনপ্রিয়তার নিরিখে নয়, জাপানের সর্বাধিক প্রকাশিত দৈনিকও ‘দ্য ইয়োমিউরি শিমবুন’। ১৮৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত জাপানি ভাষায় প্রকাশিত দৈনিক এটি। জাপানি ভাষায় প্রকাশিত দৈনিক আসাহি শিমবুন, দৈনিক মাইনিছি শিমবুন, নিহন ক্যেযাই শিমবুন এবং দৈনিক সানক্যেই শিমবুন-সহ অন্য পত্রিকাগুলোর ‘দ্য ইয়োমিউরি শিমবুন’। কেবল জাপানেই নয়, বিশ্বের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক পত্রিকাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি।

জাপানি গণমাধ্যম জগতের প্রতিষ্ঠান ইয়োমিউরি গ্রুপ থেকে প্রকাশিত হয় ‘দ্য ইয়োমিউরি শিববুন’। যা মাত্র তিনটি সদর দফতর ও অসংখ্য আঞ্চলিক অফিস নিয়ে গঠিত জাপানের সবচেয়ে বেশি প্রচারিত পত্রিকা। এর প্রধান দফতর দেশটির ইয়োচি ফুনাবাসি নগরীতে অবস্থিত। এর বাইরে আরও প্রধান তিনটি কার্যালয়- জাপানের ওটিমাচি, চিওদা, টোকিওতে অবস্থিত। ২০০২ সালের জানুয়ারি থেকে সকাল-সন্ধ্যা মিলিয়ে ১ কোটির ওপরে পত্রিকা ছাপানো হচ্ছে। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী সকাল-সন্ধ্যা মিলিয়ে প্রায় ৮৪ লাখ কপি বর্তমানে প্রকাশিত হচ্ছে। কিন্তু করোনাপূর্বে এর প্রচারসংখ্যা ছিল কোটিরও ওপরে। ২০১৫ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত পত্রিকাটির প্রচারসংখ্যা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এটি প্রকাশিত হতো প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ। টোকিও, ওসাকা, ফুকুকা ছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহর থেকে এই পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়।

১৮৭৪ সালের ২ নভেম্বর ‘দ্য ইয়োমিউরি শিমবুন’-এর প্রথম সংখ্যাটি প্রকাশিত হয়। দিনে দুবার ছাপানোর পাশাপাশি পত্রিকাটির বিভিন্ন স্থানীয় এডিশনও প্রকাশিত হয়ে থাকে। ১৯৪৮ সালে পত্রিকাটি ইয়োমিউরি পুরস্কার ঘোষণা করে। দীর্ঘ এ পথচলায় অনেক পত্রিকা ঘোষণা করছে এশিয়া নিউজ নেটওয়ার্কের সদস্য ‘দ্য ইয়োমিউরি শিমবুন’। পত্রিকাটি সব বয়সী মানুষের পছন্দের; অবাক করা তথ্য হলো- এটি জাপানি শিশুদেরও সবচেয়ে পছন্দের দৈনিক। যা শুধু প্রিন্ট ভার্সনেই নয়, অনলাইন ভার্সনেও সমানভাবে জনপ্রিয়। জাপানি সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক ‘দ্য ইয়োমিউরি শিমবুন’-এর প্রধান সম্পদক সুনিও ওয়াতানাবের হাত ধরে প্রতিদিন পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়ে থাকে। এটি সাধারণত রক্ষণশীল রাজনৈতিক মতাদর্শে খবর প্রকাশ করে থাকে।  এমনকি জাপানের অন্যতম অর্থনৈতিক পৃষ্ঠপোষক এ পত্রিকাটি। ১৯২৪ সালে শোরিকি মাতসুতারো কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেওয়ার পর পত্রিকাটির মোড় ঘুরিয়ে ফেলেন চমকপ্রদ নিউজ কাভারেজ, পুরো পৃষ্ঠাব্যাপী রেডিও অনুষ্ঠান গাইড যুক্ত করে থাকে।

 

প্রতিদিন বিক্রি হয় ৮৪ লাখের বেশি কপি

গণমাধ্যমটির প্রধান কার্যালয়কে স্থানীয় জনসাধারণ ‘দ্য ইয়োমিউরি শিমবুন বিল্ডিং’ নামে চেনেন। ২০১৩ সালে ভবনটির নির্মাণ কার্য শেষ হয়।  সম্পূর্ণ স্টিলে নির্মিত ভবনটি জাপানের ৪৩তম উচ্চতার ভবন। উচ্চতার দিক থেকে রাজধানী টোকিও-এর দালানটি ৩০তম স্থান দখল করে আছে।

১৮৭৪ সালে প্রকাশিত জনপ্রিয় এই সংবাদমাধ্যমটির রয়েছে ১৪০ বছরের ইতিহাস। জাপানে পত্রিকাটির তিনটি সদর দফতর রয়েছে। এ ছাড়াও জাপানজুড়ে রয়েছে পত্রিকাটির ব্যুরো অফিস। বিশ্বের প্রধান শহরগুলোয় আছে গণমাধ্যমটির আঞ্চলিক এবং ব্যুরো অফিস। যারা প্রতি মুহূর্তে তুলে আনে বিশ্বের নানা দেশ ও অঞ্চলের খবরাখবর। বলতে দ্বিধা নেই, ‘দ্য ইয়োমিউরি শিমবুন’ বিশ্বের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক।  ২০১৮ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত জাপান অডিট ব্যুরো অব সার্কুলেশন রিপোর্টের তথ্যমতে, জাপানি দৈনিকটি প্রতিদিন সকালের সংস্করণে ৮৪,৭৪,৪৮৩ কপি প্রকাশিত হয়। ব্রিটেনের গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও ‘দ্য ইয়োমিউরি শিমবুন’ সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিকের খেতাব অর্জন করেছে। জাপানজুড়ে গণমাধ্যমটির ৭২০০ এর বেশি নেটওয়ার্ক বা পরিবেশক রয়েছে, যারা সকাল-সন্ধ্যা দৈনিকটির উভয় সংস্করণ প্রকাশে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে থাকে। জাপানের রাজধানী টোকিও থেকে প্রকাশিক দৈনিকটির প্রতি কপির জন্য একজন গ্রাহককে খরচ করতে হয় কমপক্ষে ১.৯৯ ডলার।  গ্রাহক সন্তুষ্টি ও চাহিদার নিরিখে ইয়োমিউরি শিমবুন কর্তৃপক্ষ এর মাসিক সাবস্ক্রিশন ফি নির্ধারিত করেছে মাত্র ৪৫ ডলার। গণমাধ্যমটির প্রধান কার্যালয়কে স্থানীয় জনসাধারণ ‘দ্য ইয়োমিউরি শিমবুন বিল্ডিং’ নামে চেনেন। ২০১৩ সালে ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয়।  সম্পূর্ণ স্টিলে নির্মিত ভবনটি জাপানের ৪৩তম উচ্চতার ভবন। উচ্চতার দিক থেকে রাজধানী টোকিওর দালানটি ৩০তম স্থান দখল করে আছে।

 

দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল

অর্থনীতিবিষয়ক বিশ্বের এক নম্বর পত্রিকা

দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইংরেজি ভাষার আন্তর্জাতিক পত্রিকা। এ পত্রিকাটি মূলত ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনীতির খবর প্রকাশ করে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে ভো জোন্সের কোম্পানি; যা বিশ্ববিখ্যাত নিউজ করপোরেশনের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত হয়। এ ছাড়াও এশিয়ান এবং ইউরোপভিত্তিক সংখ্যাও প্রকাশিত হয়। এ পত্রিকাটি মার্কিন মুলুকে সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক। আউট ব্যুরো অব সার্কুলেশনের মতে, প্রতিদিন প্রায় ২১ লাখ কপি প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া তাদের কয়েক লাখ অনলাইন সাবসক্রিপশন রয়েছে। পত্রিকাটির প্রধানতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইউএসএ টুডে। যেহেতু এটি বাণিজ্যকেন্দ্রিক পত্রিকা, তাই লন্ডনের ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিদ্বন্দ্বী।

পত্রিকাটির নাম দেওয়া হয়েছে নিউইয়র্ক শহরে অবস্থিত ওয়াল স্ট্রিটের নামানুসারে। পত্রিকাটি চার্লস ডো অ্যাডওয়ার্ড জোন্স এবং চার্লস বার্গস্ট্রেচার হাত ধরে ১৮৮৯ সালের ৮ জুলাই প্রথম প্রকাশিত হয়। তবে ১৯০২ সালে সাংবাদিক ক্ল্যারেন্স ব্যারন পত্রিকাটি ১ লাখ ৩০ হাজার ইউএস ডলারের বিনিময়ে কিনে নেন।

তখন মাত্র ৭ হাজার কপি প্রকাশ পেত। কিন্তু ব্যারনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯২০ সালের শেষের দিকে তা ৫০ হাজারে গিয়ে পৌঁছায়।  তবে পত্রিকাটির আধুনিকায়ন হয় মূলত ১৯৪০ সালের দিকে।

 

আনন্দবাজার পত্রিকা

আনন্দবাজার পত্রিকা। এর সম্পর্কে আর নতুন করে কিছু বলার নেই। প্রকাশ সংখ্যার ভিত্তিতে ভারতে বাংলা ভাষার সর্বাধিক প্রকাশিত দৈনিক এটি। কলকাতার আনন্দ পাবলিশার্স এর প্রকাশক। কলকাতা, নয়াদিল্লি ও ভারতের অন্যান্য শহর থেকে দৈনিক ৮ লাখ কপিরও বেশি আনন্দবাজার পত্রিকা প্রকাশিত হয়। ইন্ডিয়ান রিডারশিপ সার্ভের এক জরিপ অনুযায়ী পত্রিকাটির পাঠক সংখ্যা ১ কোটি ৫৬ লাখ। 

বাংলা ভাষাভাষী যে কটি পত্রিকা ভারত থেকে প্রকাশ হয় তার মধ্যে এর গ্রহণযোগ্যতা অন্যতম। বর্তমানে বেশ কয়েকটি বাংলা পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তায় এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু আনন্দবাজারের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে কেউ দাঁড়াতে পারছে না। এক কথায় বাঙালিদের হƒদয়ে দাপটের সঙ্গে দখল করে রয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা। শুধু ভারতীয় বাঙালি নয়, বাংলাদেশের বাঙালিদের কাছেও এ পত্রিকার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। বিশেষ করে পত্রিকাটির অনলাইন সংস্করণে পাঠক সংখ্যা বাংলাদেশেও খুব একটা কম নয়।  ১৯২২ সালের ১৩ মার্চ প্রতিষ্ঠিত হয় এটি। এর প্রধান কার্যালয় কলকাতায়। এ ছাড়া দিল্লি থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকায় জোর দেওয়া হয় ভারতের কেন্দ্রীয় রাজনীতির পাঠপরিক্রম।

 

ট্যাবলয়েড বিল্ড

জার্মানির সর্বোচ্চ পঠিত দৈনিক ‘বিল্ড’। মূলত এটি একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকা। ট্যাবলয়েডটি সোমবার থেকে শনিবার পর্যন্ত ছাপা হয়। আর রবিবারে একটু ভিন্নভাবে পাঠকের হাতে পৌঁছায় এটি। বিভিন্ন সমসাময়িক ইস্যুকে কেন্দ্র করে রসাত্মকভাবে উপস্থাপন করা হয় এ সংখ্যায়। বিল্ড যদিও স্টাইলের দিক দিয়ে ট্যাবলয়েড কিন্তু সাইজের দিক দিয়ে ব্রডশিট। এর অন্যতম জনপ্রিয় স্লোগান হলো ‘ফ্রম ইওর ওন ওপেনিয়ন’ (সবার নিজের মতামত থেকে)। বিশেষজ্ঞদের চোখে ‘বিল্ড’ হলো বহুমাত্রিকতার নাম, যেখানে একই সঙ্গে খোশগল্প, শক্ত ভাষা কিংবা আবেগঘন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়।

ইংরেজি ভাষা ব্যবহারের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ এবং সাংবাদিকতার মারপ্যাঁচে ট্যাবলয়েডটিকে অনেকেই ব্রিটিশদের জাতীয় পত্রিকা ‘দ্য সান’-এর সঙ্গে তুলনা করেন। ব্রিটেনের বিখ্যাত ‘দ্য গার্ডিয়ান’ পত্রিকা এ ট্যাবলয়েড সম্পর্কে বলেছে, বিল্ডের আছে টপলেস গার্লস ফিচারিং, যা এটির প্রথম পৃষ্ঠায় ছাপানো হয় এবং এটি এরই মধ্যে ৫ হাজার টপলেস ছবি প্রকাশ করেছে। ১৯৫২ সালে বিল্ড প্রতিষ্ঠা করেন অ্যাক্সেল স্প্রিনজার। এটি রকমারি ছবি পরিবেশনের জন্য বিখ্যাত।  বিল্ডের ইতিহাসজুড়ে আছে হ্যামবার্গ। তবে ২০০৮ সালের মার্চে এর সদর দফতর হ্যামবার্গ থেকে বার্লিনে স্থানান্তরিত হয়। দৈনিক প্রকাশ সংখ্যা ১১ লাখেরও বেশি। এ ছাড়াও ডিজিটাল মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষ এটি নিয়মিত পড়েন।

 

টাইমস অব ইন্ডিয়া

দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া, সংক্ষেপে টিওআই। বিশ্বের ইংরেজি ভাষার সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক এটি। যে কোনো ভাষার সংবাদপত্রে এর অবস্থান প্রথম দিকেই রয়েছে।  এর সার্কুলেশন ১৬ লাখেরও বেশি। অনলাইনে পত্রিকাটির জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। ২০০৯ সালের মে মাসে পত্রিকাটির ১৫৯ মিলিয়ন পৃষ্ঠা দেখা হয়েছে, যা নিউইয়র্ক টাইমস, দ্য সান, ওয়াশিংটন পোস্ট, ডেইলি মেইল এবং ইউএসএ টুডে থেকে বেশি। ১৮৩৮ সালের ৩ নভেম্বর ‘দ্য বোম্বে টাইমস অ্যান্ড জার্নাল অব কমার্স’ নামে বোম্বেতে (তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনামল) পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়।

ওই সময় পত্রিকাটি শুধু শনি ও বুধবার প্রকাশিত হতো সেমি-উইকলি পত্রিকা হিসেবে। সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন বিখ্যাত সমাজ সংস্কারক রায় বাহাদুর নারায়ণ দিনোনাথ ভেলকার। আর তখন মূলত ব্রিটেন এবং ভারতীয় উপমহাদেশের খবর প্রকাশিত হতো। এ পত্রিকাটি দৈনিক পত্রিকা হিসেবে প্রকাশ শুরু হয় ১৮৫০ সালে। ১৯৬১ সালে এর নাম বোম্বে টাইমস থেকে দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া হয়। মালিকানার পালাবদল ঘটলেও পত্রিকাটির নীতি এবং খবর পরিবেশনের ধারাবাহিকতা ঠিক আগের মতোই রয়েছে।

 

 

বাড়ছে অনলাইন, ম্যাগাজিন ও টেলিভিশনের আধিপত্য

টিভি চ্যানেল বিবিসি

গত কয়েক দশকে অনেক টিভি চ্যানেল সারা বিশ্বে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করেছে। তবে বিবিসি নিউজের কথা বলতে হয় আলাদা করে। নির্ভরযোগ্য খবর দেখা ও শোনার জন্য বিবিসি নিউজের প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছে খুব কমই। সেই হিসেবে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী টিভি চ্যানেল হিসেবে বিবিসি নিউজের নাম চলে আসে। ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশন সংক্ষেপে বিবিসি। জনপ্রিয়তার দিক থেকে এটি এখনো ঈর্ষণীয় পর্যায়ে রয়েছে। যুক্তরাজ্যের এই শক্তিশালী সংবাদ মাধ্যমে বিশ্বের যে কোনো প্রান্তের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রায় সব ধরনের সর্বশেষ খবর প্রকাশিত হয়। এখানকার প্রায় প্রতিটি খবরই বিভিন্ন দেশের টেলিভিশন, ম্যাগাজিন ও দৈনিক প্রত্রিকায় গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার হয়ে থাকে। বিশ্বের যে কোনো বড় ধরনের ঘটনা সবার আগে বিশ্বব্যাপী প্রচার করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে তারা। বিবিসি নিউজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই প্রতিযোগিতায় টিকে আছে সিএনএন-এর মতো শক্তিশালী সংবাদমাধ্যম। তবে বিবিসি নিউজের ব্যতিক্রমী দিক হচ্ছে তারা বিভিন্ন শ্রেণি, বয়স ও পেশার মানুষের জন্য বিভিন্ন বৈচিত্র্যধর্মী খবরও সংগ্রহ করে থাকে। এ কারণে এই টিভি চ্যানেল দেখতে বিভিন্ন দেশের কোটি দর্শক টিভি সেটের সামনে এই খবরগুলো উপভোগ করে।  সবচেয়ে বড় কথা, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এ সংবাদ মাধ্যমের কর্মীরা।

 

ইয়াহু নিউজ

বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম হয়ে উঠছে অনলাইন পোর্টালগুলো। প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে কাগজের পত্রিকার শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে। সেই হিসেবে গুগল নিউজ, নিউইয়র্ক টাইমস, মেইল-অনলাইন-এর নাম উঠে আসে। তবে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে আছে ইয়াহু নিউজ। খবরের সঙ্গে ছবি ও ভিডিও যোগ হওয়াতে অনলাইন সংবাদমাধ্যমগুলো বিশ্বজুড়ে এত জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ইয়াহু নিউজের ক্ষেত্রে সর্বশেষ খবর প্রচারে সুনাম রয়েছে।

বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে যে কোনো সময় এই সংবাদ মাধ্যমে ইন্টারনেটের মাধ্যমে খবর পড়ার সুযোগ রয়েছে। ইয়াহু নিউজের বৈচিত্র্য হচ্ছে বিভিন্ন সেগমেন্টের সমাহার। এ ছাড়া সব বয়সের কথা বিবেচনা করে সাজানো হয় খবরগুলো। অনেকগুলো আলাদা আলাদা বিভাগে বিভিন্ন স্বাদের খবর তারা প্রকাশ করে থাকে। এ ছাড়া অনলাইন সংবাদমাধ্যম হওয়ায় পাঠকদের মতামত প্রকাশ করার সুযোগ সিটিজেন জার্নালিজম ও ব্লগ লেখার সুযোগ থাকায় অনলাইন সংবাদমাধ্যমগুলোতে মানুষের আগ্রহ প্রতিনিয়ত বাড়ছে।  ইয়াহু নিউজে প্রতি মাসে প্রায় সাড়ে ২০ কোটির বেশি মানুষ খবর পড়তে আসে।

 

দ্য ওয়াচ টাওয়ার

দ্য ওয়াচ টাওয়ার। এই ম্যাগাজিনের ধারেকাছেও নেই কেউ। পৃথিবীর অনেক নামকরা জনপ্রিয় ও প্রচারিত ম্যাগাজিনের তালিকায় দ্য ওয়াচ টাওয়ারের নাম উঠে এসেছে সর্বপ্রথমে। পৃথিবীর যে কোনো ম্যাগাজিনের তুলনায় বহুল প্রচারিত এটি। ২০০৮ সালে এর প্রতিটি সংখ্যাই ছাপা হয়েছে ৩ কোটি ৭০ লাখ কপি! আশ্চর্য শোনালেও এটিই সত্যি। ২৩৬টি বিভিন্ন অঞ্চলে পৌঁছে যায় এই ম্যাগাজিন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রচার সংখ্যা নিয়ে কাজ করা একটি প্রতিষ্ঠান দাবি করে দ্য ওয়াচটাওয়ার বিশ্বের সবচেয়ে বহুল প্রচলিত ম্যাগাজিন। জনপ্রিয়তার দিক থেকেও পিছিয়ে নেই এটি। তবে বিক্রির দিক থেকে এটিই সেরা। ম্যাগাজিনটির পাঠকদের বয়স ৫০ এর কাছাকাছি বলে তাদের খবর ও ছবি খুবই আকর্ষণীয় হয়ে থাকে।  ভিন্ন স্বাদের সংবাদ ও লাইফস্টাইল যুক্ত থাকায় প্রায় সব ধরনের পাঠকের কাছে এটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। প্রতি বছরই এর প্রচার সংখ্যা বাড়ছে। তবে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিযোগিতা। জার্মানি এবং চীনের আরও দুটি ম্যাগাজিন এই প্রতিযোগিতায় রয়েছে।

সর্বশেষ খবর