চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর খরণদ্বীপ ইউনিয়ন ২ নম্বর ওয়ার্ড আমিনুল হক সওদাগরের নতুন বাড়ির বাসিন্দা সৈয়দা মোরশেদা বেগম (৪৮)।
তিনি বোয়ালখালীতে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আয়া হিসেবে কাজ করেন। মাস শেষে যা বেতন পান, তাতে চিন্তার ভাঁজ পড়ে তাঁর কপালে। তাঁর একটি ছেলে ও একটি মেয়ে আছে। ছেলে মোশারফ হোসেন সামীর শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। মেয়ে সৈয়দা সুমাইয়া স্যার আশুতোষ কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পাশ করেছে।
বেতন দিয়ে প্রতিবন্ধী ছেলের চিকিৎসা করবেন নাকি সংসার চালাবেন, নাকি মেয়ের পড়ালেখার খরচ সামলাবেন? সেই চিন্তায় দিনাতিপাত করতে থাকেন প্রতিনিয়ত। তাঁর এই দুঃখের খবর পৌঁছে যায় বসুন্ধরা শুভসংঘের কাছে।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে বসুন্ধরা শুভসংঘের বোয়ালখালী শাখার সদস্যরা মুদি ও শীতকালীন সবজি বাজার নিয়ে পৌঁছে যায় তাঁর কাছে। এসব দেখে তিনি আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। মুহূর্তেই মলিন চেহারাটিতে হাসি ফুটে উঠে। এসময় সঙ্গে ছিলেন মো. মোশরাফুল হক, মো. রাজিব ও কালের কণ্ঠের বোয়ালখালী প্রতিনিধি এস.এম নাঈম উদ্দীন।
খাদ্য সামগ্রী পেয়ে মোরশেদা বেগম বলেন, সামান্য বেতনের চাকরি করে সংসার চালাতে আমার হিমশিম খেতে হয়। তার মধ্যে ছেলে প্রতিবন্ধী। স্বামী বয়স্ক হওয়ায় সে কোনো কাজ করতে পারে না। তাই আমাকে চাকরি করতে হয়। কিন্তু ছেলের চিকিৎসা করতেই চাকরির বেতনের টাকা প্রায় শেষ হয়ে যায়। খেয়ে-না খেয়ে দিনাতিপাত করতে হয় আমাদের। এমন দুঃখের সময়ে মুখে হাসি ফুটিয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। তারা আমাকে মুদি বাজার ও শীতকালীন বাজার করে দিয়েছে। যা দিয়ে অনেকদিন চলে যাবে আমার। আমি বসুন্ধরা শুভসংঘের উন্নতি কামনা করি এবং সদস্যদের আন্তরিকভাবে দোয়া করি যাতে তারা এমন মানবিক কর্মকাণ্ড করে যেতে পারে।
মো. মোশরাফুল হক বলেন, আমি বসুন্ধরা শুভসংঘের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আনন্দিত। তারা যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। সম্প্রতি বোয়ালখালীতে বসুন্ধরা শুভসংঘ অসহায় ২০ জন হতদরিদ্র নারীদের বিনামূল্যে সেলাই মেশিন দিয়েছে। এতে করে বোয়ালখালীতে পিছিয়ে পড়া ২০ জন নারীর কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। শুভসংঘ ২০ জন নারীকে সেলাই মেশিন দিয়ে এ উপজেলাতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ এক অসহায় মাকে মুদি বাজারসহ শীতকালীন সবজি বাজার করে দিয়েছে। এভাবে যদি বসুন্ধরা শুভসংঘ অসহায়দের পাশে থাকে তাহলে দেশ থেকে দারিদ্র্যতা মুছে যাবে বলে মনে করি।
স্থানীয়রা বলেন, সৈয়দা মোরশেদা বেগম আয়ের একমাত্র মাধ্যম। ছেলে প্রতিবন্ধী ও স্বামী বয়স্ক হওয়ায় তিনি চাকরি করে সংসার চালান। তবে সংসারে টানাপোড়েন থেকেই যায়। এমন সময়ে বসুন্ধরা শুভসংঘ পাশে দাঁড়িয়েছে, এটা যেন তৃষ্ণার্ত ব্যক্তিকে পানি দেয়ার মতো। এভাবে মানবতার কাজে এগিয়ে যাবে বসুন্ধরা শুভসংঘ।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম