কুয়াশার বুক চিড়ে একদল কোমলমতি শিশুরা নতুন বই হাতে পেতে উদগ্রীব হয়ে ছুটে চলছে। অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে ছুটে চলতে দেখে ঘরে বসে থাকতে পারেননি তাদের মায়েরাও। আজ সকালটা যেন মা আর শিশুদের মিলন মেলায় মুখরিত। এমন দৃশ্য দেখা গেছে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার চর বোরহানের বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলে।
আজ রবিবার সকাল ১০ টায় ঐ স্কুলের হলরুমে এমন এক আনন্দ ঘন পরিবেশে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বছরের নতুন বই তুলে দেয়া হয়। শিশুদের কলরবে তা যেনো
উৎসবে পরিণত হয়। শিশুদের পাশাপাশি অভিভাবকদের মধ্যেই কুশল বিনিময় আর হাস্যজ্বল পরিবেশে এক নির্লিপ্ত ভালোলাগার সৃষ্টি হয়।
'সবার আগে আমি নতুন বই নিমু। হেইয়ার লইগ্যা আগেই স্কুলে আইছি। আইয়া দেহি সবাই স্কুলে, নতুন বইর ঘ্রাণ ভালো লাগে।' কথাগুলো বলছিলো বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সোহাগী।
একই শ্রেণির মিরাজ বলে, 'মায়রে (মা) কইছি বেন্নাকালে (সকালে) ঘুম দিয়া উডাইয়া দেবা। আমি আইজ নতুন বই আনতে যামু।'
অভিভাবক সজিব মোল্লা বলেন, 'গত দুই বছর ধরে স্কুলটি চলছে। স্কুল থেকে খাতা, কলম, পেন্সিল, রাবার, পেন্সিল কাটার দিয়েছে। এমনকি আমাগো বাচ্চাগো লইগ্যা জামা, প্যান্ট, জুতা, ব্যাগও দিছে। আমাগো পোলাপান পড়াইতে আমাগো এক টাহাও খরচা অয় না। সব বসুন্ধরা শুভসংঘ দেয়। আল্লায় হ্যাগো ভালো করুক।'
চর আগস্তি শুভসংঘ স্কুলের শিক্ষার্থীদের বই বিতরণ অনুষ্ঠানে স্থানীয় শুক্কুর হাওলাদারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন চর বোরহান ইউনিয়ন জামায়াতের ইসলামীর আমির দুদা সরদার।
প্রধান অতিথি দুদা সরদার বলেন, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দুর্গম এ চরে পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর শিশুদের শিক্ষার সুযোগ তৈরি করেছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। তাদের এ অবদান এ অঞ্চলের মানুষ কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ রাখবে।
তিনি আরো বলেন, 'স্কুলে আসলে মনেই হয় না এখানে পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর শিশুরা পড়ে। মনে হয় আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার অংশি। আমরা বসুন্ধরা শুভসংঘের সাফল্য কামনা করি।'
এসম অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- চর বোরহান ৩নং ওয়ার্ডের জামায়াতের সেক্রেটারি মনির হাওলাদার, ইসলামী আন্দোলনের সদস্য মো. রুবেল হোসেন, শিক্ষিকা জান্নাত আরা ও আকলিমা বেগম প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/মুসা