১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ১৪:০১

বইমেলায় সোনালী সেনের 'কন্যাকাহন'

অনলাইন ডেস্ক

বইমেলায় সোনালী সেনের 'কন্যাকাহন'

এবারের অমর একুশে গ্রন্থ মেলায় প্রকাশিত হয়েছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের(কেএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সোনালী সেনের গল্পগুচ্ছ 'কন্যাকাহন'। লেখিকার মতে, এতে নারীর না বলা নানা কথা লুকিয়ে আছে। জীবনের রঙ্গমঞ্চে সমাজে পরিবারে বিভিন্ন বয়সে নারীকে বিভিন্ন আঙ্গিকে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করতে হয়। কখনও কন্যা, কখনও প্রেমিকা, কখনও জায়া আবার কখনও বা মাতৃত্বের মূর্ত প্রতিচ্ছবি হিসেবে। “কন্যাকাহন'' গল্পগুচ্ছের প্রতি ছত্রে ছত্রে নারী জীবনের না বলা কথাগুলোই প্রতিবিম্বিত হয়ে উঠেছে।

পাঞ্জেরী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত “কন্যাকাহন'' লেখিকার প্রথম গল্পগুচ্ছ। বই মেলার ৩নং স্টল, পাঞ্জেরী প্রকাশনীতে বইটি পাওয়া যাবে। বইটির মূল্য ১৪০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও বই মেলা থেকে এটি ১০৫ টাকায় সংগ্রহ করা যাবে।

কন্যাকাহন-এ একটি গল্প সীমন্তী নামের সদ্য কিশোরী মেয়েটির, যে কিনা জীবনের অর্থ খুঁজে না পেয়ে সুইসাইড করেছে। ইন্সপেক্টর হূমায়ুনের মতে, 'অ্যা ক্লিন  অ্যান্ড স্পটলেস সুইসাইড'। আচ্ছা, সুইসাইড কি কখনো ক্লিন এন্ড স্পটলেস হতে পারে? এই মেকি সামাজিক আবহাওয়ার চাদরেই একটা হিংস্রতার বীজ কোথাও না কোথাও ঠিকই ছড়িয়ে আছে। আমরা সাদা চোখে সুইসাইড বলতে যা বুঝি তা আসলে মার্ডার, কোল্ড ব্লাডেড মার্ডার। আমরা হত্যা করি আমাদের সন্তানদের শৈশবকে, আমরা হত্যা করি সহজ, স্বাভাবিক সামাজিক সম্পর্কগুলোকে, আমরা হত্যা করি নিত্যদিনের ছোট ছোট ভাবনাগুলোকে।

বইয়ে রয়েছে অন্নদা নামের একজন অশীতিপর নিঃসঙ্গ বাল্যবিধবা বৃদ্ধার গল্প, যে কিনা জীবন সায়াহ্নে উপস্থিত হয়ে বুঝতে পারে পৃথিবীতে কতখানি অনাকাঙ্ক্ষিত সে। সারা জীবনের সংগ্রাম আর ত্যাগের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত সন্তানদের অবহেলা আর উদাসীনতা যাকে প্রতিনিয়ত এফোঁড় ওফোঁড় করে দেয়। নিজের দীর্ঘ আয়ু নিয়ে বিব্রত মা অভিশাপ দেয় না নিজ আত্মজদের, বরং শেষ নিঃশ্বাসে ধারণ করে সন্তানের প্রতি নিরন্তর শুভকামনা।

একটি গল্পে তুলে ধরা হয়েছে তনিমা নামের এক কর্মজীবী মায়ের কর্মক্ষেত্র ও সংসারের জটিল রোজনামচা। যেখানে প্রতিনিয়ত একজন কর্মজীবী নারীকে মোকাবিলা করতে হয় হাজারো প্রতিবন্ধকতা, উপেক্ষা করতে হয় বহুমূখী মানসিক দ্বন্ধ।

রয়েছে হূরজান নামের এক গ্রাম্য বালিকার গল্প। ধর্মান্ধতা আর অন্ধ কুসংস্কার যেখানে পাহাড়সম বাধা হয়ে দাড়িয়েছে তার প্রেম আর আত্মমর্যাদার পথে। এ এক অন্ধ ধর্মবিশ্বাস,   গ্রাম্যরাজনীতি, পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার কষাঘাতে জর্জরিত নারীর ঘুরে দাঁড়াবার গল্প, যে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে প্রতিবাদ করতে জানে নিজের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে।

“রংধনুবেলা” গল্পটিতে আছে স্বামী পরিত্যক্তা নাদিয়াজামানের দুইসন্তানকে নিয়ে সাবলম্বী হয়ে ওঠার কাহিনী। জটিল আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর সমাজব্যবস্থায় সন্তানদের রংধনুবেলা শৈশব, প্রজাপতি কৈশোর নিশ্চিত করার সংগ্রাম।

১৯৪/২ সিমেট্রীরোড গল্পটিতে আছে বিচ্ছিন্ন নারীর একান্ত নিসংগতা, বিষন্ন আত্মউপলব্ধি  আর মনোসামাজিক দ্বন্দ্বের কাহিনী। যে কিনা জীবনকে বয়ে নিয়ে যেতে পারে কেবল জীবনের শেষপ্রান্তটি দেখার দুর্বার অদম্য আকাঙ্ক্ষায়। 

বিডি-প্রতিদিন/১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর