৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ১৫:৫৬

জাবিতে বছর ধরে পেরেক বিদ্ধাবস্থায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি !

জাবি প্রতিনিধি

জাবিতে বছর ধরে পেরেক বিদ্ধাবস্থায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি !

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিটির এখন বেহাল দশা। প্রতিকৃতিটির বুকে, কাঁধে ও মাথার আশপাশে সারি সারি লোহার পেরেক গাঁথা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে অবস্থিত জাতির পিতার একমাত্র এই প্রতিকৃতিটির এমন নাজেহাল দশার এক বছরেও চোখে পরেনি কর্তৃপক্ষের। এ অবস্থাতেই প্রতিকৃতিটিতে শোকসহ বিভিন্ন দিবসে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থি শিক্ষক ও ছাত্রলীগ নেতারা। এ নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট হল প্রশাসনও।

হলের নিরাপত্তা প্রহরী ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, প্রায় বছরখানেক আগে হল অফিসের নির্দেশে কোনো এক অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে আলোকসজ্জার জন্য প্রতিকৃতিতে পেরেক লাগানো হয়! পরে অনুষ্ঠান শেষে পেরেক খুলতে ভুলে যায় কর্তৃপক্ষ। সেই থেকে এখনো একই অবস্থা চলছে।
এদিকে, জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পেরেক লাগানোর দৃষ্টতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, আলোকসজ্জার কথা বলে এভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিতকৃতির উপরে পেরেক লাগানো অবমাননাকর ও লজ্জাজনক। বর্তমান সরকারের আমলে এটি কল্পনাই করা যায় না। প্রশাসনকে দ্রুত প্রতিকৃতির উপর থেকে পেরেক সরিয়ে ফেলার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই আবাসিক হলের এক নিরাপত্তা প্রহরী বলেন, 'প্রতিদিনই বাইরে থেকে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা ছবির এই অবস্থা দেখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমালোচনা আর হাসি-ঠাট্টা করে। এতে আমরাও লজ্জা পাই।' বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুর রহমান জনি বলেন, 'এটা জাতির পিতার জন্য যেমন সম্মানহানীকর, আমাদের জন্যও লজ্জাজনক। আমরা আশা করবো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবিলম্বে এই প্রতিকৃতির সংস্কার করে জাতির পিতার যথাযথ সম্মানের ব্যবস্থা করবে।'
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলমগীর কবির বলেন, 'বছরখানেক আগে আলোকসজ্জার কারণে ওখানে পেরেক গাঁথা হয়েছিল। ওই পেরেকগুলো উঠালে প্রতিকৃতিটির বর্তমান অবস্থা নষ্ট হয়ে যাবে, তাই পরে আর পেরেকগুলো তোলা হয়নি। এখন  যেহেতু বিষয়টি আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে, তাই এ বিষয়ে কী করা যায় তা ভেবে দেখবো।' এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আবুল হোসেন বলেন,  'আমি প্রতিকৃতিতে পেরেক গাঁথার বিষয়টি সম্পর্কে জানি না। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে পরে কথা বলবো।'
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ১৫ আগস্ট শিল্পী প্রশান্ত কর্মকার বুদ্ধ ও হাফিজ উদ্দিনের নকশায় নির্মিত এই প্রতিকৃতিটির উন্মোচন করেন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির। ২০০০ সালের ২৮ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তত্কালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিডি-প্রতিদিন/৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/শরীফ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর