রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারপিট করে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের এক সহ-সভাপতি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম জিহাদ হোসাইন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (টিএসসিসি) সামনে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। মারধরকারী উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রুহুল আমিন কিস্কু ওরফে র্যাক।
জিহাদ বলেন, ‘আমি বিকেল বেলা টিএসসিসির পাশে বসে ছিলাম। কিছুক্ষণ পর এক ছেলে এসে বলল, আমাকে কোন বড় ভাই ডাকছে। তার সাথে গিয়ে রুহুল আমিন কিস্কুকে (র্যাক) বসে থাকতে দেখি। এসময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই কিস্কু আমাকে রড দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে। এরপর ১২ থেকে ১৫ জন এসে আমাকে মারধর শুরু করে। তারা আমাকে রড, লাঠি ও লোহার পাইপ দিয়ে মারধর করে। আমি তখন মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। আর কিছু মনে ছিল না আমার।’
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যার পরে হবিবুর রহমান হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী জিহাদকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এসময় তার মাথায় প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তারা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান জিহাদকে।
হাসপাতালে সরেজমিন জিহাদের কাছে গিয়ে দেখা যায়, হাসাপাতালের ৮ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন জিহাদ। তার মাথায় চারটি সেলাই দেয়া হয়েছে। তার শরীরেও বিভিন্ন জায়গায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
জিহাদের সহপাঠীরা জানান, মারধরকারীদের আঘাতে জিহাদ জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিল। প্রায় আড়াই ঘন্টা পর তার জ্ঞান ফেরে। জিহাদের মাথা থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। ডাক্তাররা বলেছেন, জিহাদ পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে কয়েকদিন সময় লাগবে।
মারধরের বিষয়ে কথা বলার জন্য রুহুল আমিন কিস্কু ওরফে র্যাককে রাত সাড়ে ৯ টায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এখন ব্যস্ত আছি। এবিষয়ে এখন কথা বলতে পারব না। একটু পরেই আপনাকে আমি ফোন দিচ্ছি।’
৩০ মিনিট পর রুহুল আমিনকে আবার ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি রুহুল আমিন নই। আপনি ভুল নম্বরে ফোন দিয়েছেন।’ ৫ মিনিট পরে রুহুলের কাছে আবার ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি মারধরের বিষয়ে কোনো কথা বলতে পারব না।’
তবে রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। আমি যতদূর শুনলাম ওই ছেলের সঙ্গে নাকি রুহুলের আগে থেকেই একটা ঝামেলা ছিল। সেই সূত্রে ধরেই হয়তো মারধরের ঘটনাটি ঘটেছে। আমরা বিষয়টি আরো ভালভাবে খোঁজ খবর নিচ্ছি। কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় সেটা দেখা হচ্ছে।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘আইন নিজ হাতে তুলে নেয়ার ক্ষমতা কাউকে দেয়া হয়নি। তবে আমার কাছে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বিডি প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর