ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রধান সমস্যাগুলোর একটি শিক্ষার্থীদের আবাসন সঙ্কট। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকা ছাত্রসংখ্যার তুলনায় হলের স্বল্পতা, সিটের অপ্রতুলতা এবং ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের আধিপত্যের কারণে এই সংকটের বলি হচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গাদাগাদি করে রুমভেদে ৮ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থীকে একসাথে থাকতে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় গণরুম রয়েছে বিজয় একাত্তর হলে, যেখানে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী একসাথে থাকেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ‘এই সমস্যা দীর্ঘদিনের হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর সমাধানে দৃশ্যত কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না। যা নিচ্ছে তা আশ্বাসের নিগড়েই বন্দী।’
তাই এই সঙ্কট সমাধান না হওয়ার আক্ষেপ থেকে প্রতিবাদ নেমেছেন স্বয়ং ডাকসুর সদস্য তানভীর হাসান সৈকত। প্রতিবাদের ধরনও অভিনব; গণরুমেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
রবিবার রাতে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে নিজের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান সৈকত। ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার মধ্যে গণরুম একটি বড় সমস্যা। ডাকসুর নির্বাচনে সবগুলো প্যানেলেরই ইশতেহারের বড় জায়গা জুড়ে গণরুম সমস্যা সমাধান নিয়ে কথা ছিল। আমি নিজেও গণরুম সমস্যা সমাধানের কথা বলে ভোট চেয়েছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য ডাকসুর নির্বাচনের এতদিন পরেও গণরুম সমস্যার কোনো সমাধানে পথ তৈরি করতে পারিনি। কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই সমস্যার কোনো সমাধানের চেষ্টাও করেনি।’
ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে নির্বাচিত এই ছাত্র প্রতিনিধি আরও লিখেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীই মেধাবী, তাদের সুযোগ দিলে তারা তাদের মেধা ও মননের পরিচয় ঘটাতে সক্ষম হবে। গণরুমে কেন নষ্ট হবে আমাদের সোনার ছেলেদের মেধা? আর আমি মনে করি গণরুমই তাদের মেধার বিকাশ ঘটাতে প্রথম বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
যেহেতু ছাত্রদের একজন প্রতিনিধি হয়েও এতো দিনে এই সমস্যার কোনো সমাধান তৈরি করতে পারিনি তাই আমি লজ্জিত এবং ক্ষমা প্রার্থী। একইসাথে আমি আজ থেকে গণরুমে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আর আমার নিজের লিগ্যাল সিটে প্রতিদিন একজন করে গণরুম থেকে ছাত্র ঘুমাবে যদিও আমি ইতোমধ্যে একজন ছাত্রকে আমার সাথে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি, আমি একা একসিটে ঘুমাইনি। যতদিন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গণরুম সমস্যার দৃশ্যমান কোন সমাধান করছে। এবং একইসাথে গণরুমে থাকাটা আমার প্রতিবাদের একটি ভাষা। প্রয়োজনে একাই লড়াই করে যাবো।’
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন