মানোন্নয়ন দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয় প্রায় ৪০০ জন শিক্ষার্থী। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, তারা ভর্তি হতে পারবে না। এ খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিষয়টি গত ১ সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে জানানো হলেও তারা কোন ধরনের সিদ্ধান্ত দিতে পারছে না। পরে তাদেরকে ক্যাম্পাস থেকেও বিতাড়িত করে দেয় প্রশাসন। আজ বুধবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন তারা।
ইমাম হোসাইন হৃদয় নামের এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের ভর্তি নিতে হবে। আমরা আজ বৃহস্পতিবার ১০টার দিকে ক্যাস্পাসে যাই। কিন্তু আমাদেরকে ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে বলে। আমরা শহীদ মিনারের সামনে বসা ছিলাম। হঠাৎ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কয়েকজন এসে আমাদেরকে চলে যেতে বলে। আমরা না গেলে পুলিশ দিয়ে বিতাড়িত করবে বলে জানা ন৷ এতেও আমরা যায়নি। পরে তারা আমাদের যেতে বাধ্য করে। পরে আমাদেরকে এসে তিনটায় সিদ্ধান্ত জানানো হবে কথা বলে। কিন্তু কোন ধরনের সিদ্ধান্ত জানায়নি। তাই আমরা চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছি। এছাড়াও শনিবার সকাল ১০টার দিকে আমরা সংবাদ সম্মেলন করব। সেখানে আমরা কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হব।
জানা যায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে মানোন্নয়ন নিয়ে ভর্তি জটিলতায় পড়ে প্রশাসন। পরে বাধ্য হয়ে বুধবার আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় কোর কমিটি। আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন তারা। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা দাবি করছে, প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তও অস্পষ্ট। গত বছর আবেদনের যোগ্যরা এ বছর আবেদনের যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে না। এটি প্রশাসনের স্পষ্ট করা ছিল না। তাই অনেকেই পরীক্ষা দিয়ে মেধা তালিকায় স্থান করে নেয়। এছাড়াও বুধবার (৬ নভেম্বর) বিকেল দুইটার দিকে উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে কোর কমিটির জরুরি সভা শুরু হয়। পুরো সময় ভুক্তভোগী ভর্তিচ্ছুরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। পাঁচটার সময় একাডেমিক শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার এসএম আকবর হোছাইন তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। তবে কোর কমিটি ‘স্পষ্ট’ কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের বলা হয়, তোমরা বিষয় নির্বাচনের সুযোগ পাচ্ছ। তবে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পরবর্তীতে জানতে পারবে, তোমরা ভর্তি হতে পারবে নাকি পারবে না।
ভর্তিচ্ছুদের দাবি, প্রথম থেকেই তাদের একই কথা বলেছে। প্রশাসনের ভাষ্য, বিষয় পছন্দের পর যাচাই বাছাইয়ে তারা বাতিল হয়ে যাবে। তবে সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরও অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে আসেনি ওই পরীক্ষার্থীরা।
এর আগে, ওই সিদ্ধান্তের কথা শুনে বুধবার এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর মা অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তাকে চবি মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ওই পরীক্ষার্থীর নাম সানজিদা ইয়াসমিন। এরপর রাত পৌনে আটটার দিকে তাদের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।
পরের দিন আজ বৃহস্পতিবার সকাল দশটা থেকে ক্যাস্পাসের ভর্তিচ্ছুরা অবস্থান নেয়। পরে সেখান থেকে প্রশাসন তাদেরকে তাড়িয়ে দেয়। এরপরেও তারা দীর্ঘক্ষণ বিশ্বিবদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট এলাকায় অবস্থান নেয়। পরে সেখানেও তাদেরকে বিতাড়িত করার অভিযোগ রয়েছে। এক পর্যায়ে তারা বাধ্য হয়ে চট্টগ্রাম শহরের প্রেস ক্লাবের সামনে এসে মানববন্ধন করে। সেখানেও প্রায় দুই শতাধিক ভর্তিচ্ছু উপস্থিত ছিল।
একাডেমিক শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার এসএম আকবর হোছাইন সাথে যোগাযোগ করা হলে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব