ফিলিস্তিনে ইসরায়েলী আগ্রাসন আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সকল সীমা ছাড়িয়ে গেছে। দুই রাষ্ট্র সমাধানই হল এই সমস্যার একমাত্র সমাধান। এর জন্য স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে হবে। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলী আগ্রাসনের প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন বক্তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মঈন উদ্দিন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহসহ অন্য শিক্ষকবৃন্দ। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুইয়া।
মানববন্ধনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, দ্বি-রাষ্ট্রিক সমাধান এই সমস্যার সর্বোত্তম সমাধান। যেমনভাবে একটি ইসরায়েল রাষ্ট্র আছে, তেমনিভাবে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তবে সেই রাষ্ট্র অবশ্যই ১৯৬৭ সালের দখলকৃত ভূমি ফিরিয়ে দিয়ে ১৯৪৮ সালের মানচিত্র অনুযায়ী হতে হবে।
তিনি বলেন, ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠিত হলেও তখনও ফিলিস্তিন স্বীকৃতি পায়নি। এরপরে ১৯৬৭ সালেও তারা তাদের আবাসভূমি হারিয়েছে। তারা এই প্রতারণার শিকার হয়েছে জাতিসংঘ ও ওআইসির মাধ্যমে। কিন্তু স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবি বারবারই উপেক্ষিত হয়েছে।
অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীসহ যে সমস্ত রাষ্ট্রপ্রধানরা মানবতা-বিরোধী অপরাধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, তাদের প্রতি তীব্র নিন্দা জানাই। এটি কোনো ধর্মের বিষয় নয়, এটি মানবতার বিষয়। ইসরায়েলের সমগ্র মানবতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ যদি ফিলিস্তিন ও রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজই না করতে পারে, তাহলে তা বন্ধ করে দেওয়া উচিত মন্তব্য করে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, একটি সন্ত্রাসী-গণহত্যাকারী একটি রাষ্ট্রকে যদি তারা নিবৃত্ত না করতে পারে, তাহলে এটার কী প্রয়োজন আছে। আমরা দাবি জানাই, অবিলম্বে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়া হোক, সেটাই হবে সমাধান। অস্ত্র বিরতি বা মায়াকান্না কোনো সমাধান নয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন প্যালেস্টান স্টুডেন্ট ইউনিয়নের প্রতিনিধি হাকিম রাবা। ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে সমর্থন করায় তিনি বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
সভাপতির বক্তব্যে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক রহমতউল্লাহ বলেন, আন্তর্জাতিক সব আইনে এই সমস্যার সমাধান আছে। কিন্তু ইসরায়েল সকল আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। রাষ্ট্রীয় আগ্রাসন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্যে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিচার হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর
