জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, ‘কাব্য চেতনার সঙ্গে বিজ্ঞানের রয়েছে গভীর নৈকট্য, দূরত্ব নয়। কাব্যে যে আবেগ থাকে সেটি বিজ্ঞানের যুক্তিতে পরিণত হয়। কবি সত্তা বা লেখক যখন প্রকৃতি প্রেমের কথা বলে, বিজ্ঞানী কিন্তু সেটি সুরক্ষার কথাই বলে। কবিতা, উপন্যাস বা লেখনিতে নানা রংয়ের মিশ্রণ থাকে। ভাবনার সংমিশ্রণ ঘটে। সেটিই বিজ্ঞান ভাবনার রসায়নে পরিণত হয়।’ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘কবিরা যখন কাব্যের মধ্যে সীমান্ত ভাঙার কথা বলেন, তখন মনে হয় এটি কি শুধু ভাবাবেগ। কিন্তু একই সঙ্গে যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দেখি, তখন মনে হয় কবির সীমান্ত ভাঙার যে অভিপ্রায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি তো তাই করে। কবির প্রকৃতিকে ভালোবাসার যে নিবিড় তাগিদ, বিজ্ঞান তো সেই প্রকৃতি রক্ষায় জীবনব্যাপী সংগ্রামে লিপ্ত হয়। কবি এবং লেখকের ভাবনার যে রসায়ন এবং মিথস্ক্রিয়া হয়, প্রযুক্তি বিজ্ঞান তো তারই বাস্তব প্রয়োগ। তাহলে কবি এবং লেখকের ভাবনাই কি বিজ্ঞান চর্চার গতি তৈরি করে না।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘বিজ্ঞান এবং কলার দূরত্ব না নৈকট্য, সেটিও ভাবনার সময় এসেছে। লেখক শুধু ভাবাবেগ ত্বারিত নয়, লেখক সমাজচিত্র যেভাবে উৎঘাটন করে, তার মধ্য দিয়ে নতুন নতুন বিজ্ঞান ভাবনা, প্রযুক্তি ভাবনা, সমাজ ভাবনা এবং এগিয়ে যাওয়ার রশদ তৈরি হয়। লেখকের সত্তায় সত্য নিহিত। সে কারণেই বলি কবি শুধু কবি হতে চান, সে কভু কোটিপতি হতে চান না। লেখক সত্যের অনুসন্ধানে যে রং মিলায় সেটি আর কিছু না, সেটি হচ্ছে প্রকৃতির সান্নিধ্যে, সত্যের সান্নিধ্যে আরও সত্য উৎঘাটনের অভিলাস। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে যদি আমরা দেখি, তাহলে এই সমাজ গড়ার পেছনে ভীষণভাবে কাজ করে লেখক সত্তা।’
কৃষ্টিবন্ধন আয়োজিত মহাকবি মধুসূদন পদকপ্রাপ্ত কবি ও কথাসাহিত্যিক অধ্যক্ষ মাসুদ আলম বাবুল এর ৩টি গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে ড. সবুজ শামীম আহসানের সভাপতিত্বে ও দিল আফরাজ মিতার সঞ্চালনায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. হাকিম আরিফ, অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতের কবি ও গবেষক ড. দেবব্রত দেবরায়, ভারতের কবি ও সাংবাদিক আব্দুল কাইউম। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-কবি আসলাম সানী, কবি আবুল বাসার সেরনিয়াবাদ, ওয়াজেদ কামাল, বাচিকশিল্পী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রূপা চক্রবর্তী, ভরতের বাচিকশিল্পী সেলিম দুরানী বিশ্বাস ও বাচিকশিল্পী সাধন দাস প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/এমআই