ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শিহাবের চিকিৎসাবাবদ খরচের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে আন্দোলন করেছেন সহপাঠীরা। ফলে বাসগুলো নির্ধারিত সময় ২টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ১ ঘণ্টা দেরিতে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ শহরে থাকা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বুধবার দুপুর ২টা থেকে তালা লাগিয়ে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এসময় কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলো আটকে পড়ে। পরে বিকাল ৩টার দিকে প্রক্টরিয়াল বডির আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর প্রক্টর অফিসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন প্রক্টরিয়াল বডি ও পরিবহন প্রশাসক।
পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, সহকারী প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন ও সহযোগী অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলামসহ অন্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। আহত শিক্ষার্থীর ক্ষতিপূরণ চান শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে প্রশাসন ১০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মতি হয় কর্তৃপক্ষ।
এর আগে গত ১৬ মে দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শিহাব মোটরসাইকেল নিয়ে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবন সংলগ্ন সাহাবুল নামের এক চালকের বাসের সঙ্গে দুর্ঘটনার শিকার হন। এতে ওই শিক্ষার্থী মুখে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং তার চোয়ালের হার ফেটে যায়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে ছয়দিন চিকিৎসা দেওয়ার পর ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
আন্দোলনকারীরা জানান, আমাদের বন্ধু শিহাব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিতরে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এ ব্যাপারটি আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু সেদিন প্রশাসনের কেউ শিহাবের খোঁজ-খবর নেয়নি। পরদিন আমরা তার চিকিৎসার জন্য পরিবহন প্রশাসকের কাছে যায়। সেদিন তিনি ব্যস্ত থাকার কারণে কোন ক্ষতিপূরণ পায়নি।
এরপর আমরা আজকে আবারও তার কাছে ক্ষতিপূরণের দাবিতে গেলে তিনি আমাদের মাত্র পাঁচ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে বলেন তোমাদের যা ইচ্ছা করো এবং সেখানকার দায়িত্বরত কর্মকর্তারা আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। তারা বলেন, সে তো মারা যায়নি, মারা গেলে ২৫ হাজার টাকা দিতাম। তারা আরও বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের। তোমরা কয়েক বছর থাকার পর চলে যাবে। আর আমরা সারা বছর এখানে থাকবো।
এ বিষয়ে পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, এই ঘটনাকে নিয়ে প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে আন্দোলন করা ঠিক হয়নি। দুর্ঘটনা এক পক্ষের দোষের কারণে হয় না। উভয়পক্ষের ভুলের কারণেই দুর্ঘটনায় হয়। হয় তো কারও দোষ কম আবার কারও বেশি।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ জানান, শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। আমরা উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে বিষয়টির সমাধান করেছি।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত