৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ২২:২০

হল চালুর ১ বছর পরও কাটেনি সংকট, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

রুবেল হোসাইন, জাবি:

হল চালুর ১ বছর পরও কাটেনি সংকট, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

মধ্যরাতে ফজিলাতুন্নেছা হলের ছাত্রীদের বিক্ষোভ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৬টি হলের মধ্যে মেয়েদের ফজিলাতুন্নেছা হল ও ছেলেদের শেখ রাসেল হল যথাক্রমে গত বছরের ২৮ ও ২৯ শে জানুয়ারি চালু করা হয়। প্রকল্পের ডিটেইল প্রজেক্ট প্ল্যান (ডিপিপি) অনুযায়ী আবাসনের সব ধরনের সমস্যার সমাধান এবং শিক্ষা ও গবেষণার উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত করার কথা থাকলেও হলগুলোতে এখনো সংকট কাটেনি। 

এদিকে চেয়ার-টেবিলসহ একাধিক সংকট সমাধানের দাবিতে শুক্রবার (০২ ফেব্রুয়ারি) রাত সোয়া ১০ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের হলগুলো সংলগ্ন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ফজিলাতুন্নেছা হলের শিক্ষার্থীরা। পরে রাত ১২ টার দিকে প্রশাসনের আশ্বাসে হলে ফিরে যান তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হল দুটিতে ১ হাজার করে মোট দুই হাজার শিক্ষার্থী থাকেন। প্রতিটি কক্ষে মোট ৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য পৃথকভাবে খাট দেওয়া হলেও দেওয়া হয়নি পড়ার চেয়ার-টেবিল ও আলমারি। চালু হয়নি হলের ডাইনিং। ফলে শিক্ষার্থীরা পার্শ্ববর্তী হলের ডাইনিং ও ক্যান্টিনে যান খাবারের জন্য। এছাড়া, শেখ রাসেল হলের সামনের রাস্তা বন্ধ থাকায় প্রায় ১ কিলোমিটার পথ ঘুরে তাদেরকে বটতলায় খাবারের জন্য যেতে হয়। যেখানে তাদেরকে গুণতে হয় বাড়তি টাকা। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলগুলোতে বিনোদনের ব্যবস্থা, সমৃদ্ধ পাঠাগার, ব্যায়ামাগার, ডাইনিং, ক্যান্টিন, মসজিদ, চৌকি, চেয়ার-টেবিল ও আলমারি, সেলুন, লনড্রি, ফটোকপি করার সুবিধা, ইন্টারনেটের ব্রডব্যান্ড সংযোগ সুবিধাসহ শিক্ষার সহায়ক সকল অত্যাধুনিক ব্যবস্থা থাকার কথা তাদের বলা হয়েছিল। এরমধ্যে চৌকিসহ কয়েকটি ছাড়া অপূর্ণ রয়ে গেছে অধিকাংশ সুযোগ-সুবিধা। ফলে পড়াশোনায় ব্যাঘাতসহ তাদেরকে তীব্র ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, অনতিবিলম্বে সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে। 

ফজিলাতুন্নেছা হলের ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তামিমা খাতুন বলেন, পড়াশোনার জন্য হলে আমাদেরকে কোন চেয়ার-টেবিল দেওয়া হয়নি। সামান্য বৃষ্টি হলেই হলের কক্ষে পানি ঢুকে যায়। এছাড়া হলের খাবারের মান অত্যন্ত নিম্নমানের। এসব সমস্যার কথা একাধিকবার জানালেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। প্রশাসনের স্বদিচ্ছা না থাকা ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের গাফিলতিই এর জন্য দায়ী। 

শেখ রাসেল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. সাকলায়েন মোস্তাক অভিযোগ করে বলেন, হল চালুর ১ বছর পরও কর্তৃপক্ষ আমাদের হলে ডাইনিং চালু করেনি। খাবারের জন্য ১ কিলোমিটার হেঁটে আমাদেরকে বটতলায় যেতে হয়। এতে যেমন বাড়তি টাকা খরচ হয়, তেমনি প্রচুর ভোগান্তি পোহাতে হয়। আমরা চাই অতি দ্রুত সমস্যাগুলো সমাধান করা হোক। তবে সংকটগুলো সমাধানে কোন গাফিলতি নেই বলে জানান সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষ। 

ছাত্রীদের বিক্ষোভের কথা উল্লেখ করে ফজিলাতুন্নেছা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুহাম্মদ ছায়েদুর রহমান বলেন, চেয়ার-টেবিল, আলমারিসহ কয়েকটি সংকট সমাধানের দাবিতে ছাত্রীরা বিক্ষোভ করেছে। এবিষয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প অফিসকে জানিয়েছি। কিছুদিনের মধ্যে এসব সমস্যার সমাধান হবে। 

সমস্যাগুলো সমাধানের কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান শেখ রাসেল হলের প্রাধ্যক্ষ মো. তাজউদ্দিন সিকদার।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নতুন হলগুলোর সংকটের কথা শুনেছি। প্রকল্প অফিসকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আশা করছি, আগামী দেড় মাসের মধ্যে সমস্যাগুলো সমাধান হয়ে যাবে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর