ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচন। একইসঙ্গে আগামী রবিবারে নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা চূড়ান্ত করে সোমবার ঘোষণা করা হবে নির্বাচনের তফসিল।
শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে মুঠোফোনে জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জকসু প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘২৭ নভেম্বর নয়, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে ডিসেম্বরের ৮, ৯ বা ১০ তারিখকে আমরা যাচাই করে রেখেছি। চূড়ান্ত হয়নি নির্দিষ্ট কোনো তারিখ। যেহেতু ১৩ ডিসেম্বর আমাদের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে এবং ১১ ডিসেম্বর সাপ্তাহিক শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ওইদিন নির্বাচন সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে আমরা আশাবাদী আগামী ১০ ডিসেম্বর বুধবার অনুষ্ঠিত হতে পারে নির্বাচন।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ‘যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হবার পরেই প্রথমবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে সে ক্ষেত্রে আমাদের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কিছু সময় লাগছে। এ জন্য ২৭ নভেম্বর জকসু হচ্ছে না। পাশাপাশি অনেক ছাত্র সংগঠনও নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার সুবিধায় ডিসেম্বরেই নির্বাচন হোক এটা চাই। তবে আমরা চাই, যতদ্রুত সম্ভব সকলকে নিয়ে একটি উৎসবমুখর নির্বাচন উপহার দিতে।’
অধ্যাপক মোস্তফা হাসান বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমাদের ভোটার তালিকা তৈরি, নির্বাচনে কারা প্রার্থী হবে এবং ভোট দিতে পারবে এসব কিছু খসড়া করা হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনী আচরণ বিধিমালাও খসড়া করে রেখেছি। যেহেতু আগে কখনো জকসু হয়নি আমাদেরও নিজস্ব কোনো আইন বা সংবিধি নেই। সেক্ষেত্রে আমরা চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা থেকে নির্বাচনী আচরণ বিধিমালাটা তৈরি করেছি।’
অধ্যাপক মোস্তফা হাসান আরও বলেন, ‘তবে এটি চূড়ান্ত হয়নি এখনো। আগামীকাল সব ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন, সাংবাদিক প্রতিনিধি, নির্বাচনের অন্যান্য স্টেক হোল্ডারদের সাথে বসে বৈঠক করে এটি চূড়ান্ত করা হবে। যেন কেউ দ্বিমত করতে না পারে। আশাকরি রবিবার এটি চূড়ান্ত হয়ে গেলো সোমবার বা মঙ্গলবারেই আমরা জকসুর তফসিল ঘোষণা করে দেব।’
মোস্তফা হাসান বলেন, ‘আমাদের ওপর সকলে আস্থা রেখে একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছে। অবশ্যই আমরা সকলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য। এই ক্ষেত্রে সকল ছাত্র সংগঠন ও ব্যক্তিকে সমান সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। কাউকে বিন্দু পরিমাণ সেদিক করতে দিব না আমরা। ২০ বছর পর রাজধানীর বুকে শ্রেষ্ঠ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে জকসু হচ্ছে। সুতরাং, সকলের মত আমরা চাই, অন্যান্য ক্যাম্পাসের চেয়ে আমাদের জকসু নির্বাচন সারাদেশে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকুক।’
ছাত্রদলের সম্পাদকীয় ও সদস্য পদ বৃদ্ধির দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে জকসুর সংবিধি পাস হয়ে গেছে। এটাই হাত দেওয়ার কারো কোনো সাধ্য নেই। পুনরায় এটি সংশোধন করতে হলে একাডেমিক কাউন্সিল, সিন্ডিকেট সভা, ইউজিসি, মন্ত্রণালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে যেতে হবে। সুতরাং এটি লম্বা একটি প্রক্রিয়া। আবার নতুন করে সংযোজন করতে গেলে অনেক সময়সাপেক্ষ ও সবকিছু পিছিয়ে যাবে।’
মোস্তফা হাসান আরও বলেন, ‘আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমরা সেটা স্বীকার করি। আমরা চেষ্টা করব সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে জকসু নির্বাচন সম্পন্ন করতে। অন্যান্য ক্যাম্পাসের তুলনায় আমাদের সকল ছাত্র সংগঠন অনেক ঐক্যবদ্ধ। আশাকরি তারা সহযোগিতা করলে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে জকসু হবে।’
বিডি-প্রতিদিন/আশফাক