রবিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

প্রিয় দুই নানী

প্রিয় দুই নানী

বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছে শরীর। লাঠির উপর ভর দিয়ে ঠুকঠুক করে ঘুরে বেড়ান গোটা ক্যাম্পাস। দুই বোন মিলে একটুখানি হাঁটেন আবার বসে পড়েন কোনো এক চত্বরে। ক্যাম্পাসের সবাই তাদের নানী বলেই ডাকে। সম্পর্কটাও তাই, নানীর মতোই রসিকতার। আর সে কারণেই হয়তো শিক্ষার্থীদের কাছে রসিকতার ছলেই ভিক্ষা করেন। বলেন, 'নানা ভাই একটা ট্যাহা দে। আল্লাহ তোগো ভালো চাকরি দিব, সুন্দরী বউ দিব। তোরা না দিলে খামু কেমনে?' প্রায় ৩০ বছর ধরে এভাবেই ক্যাম্পাসে ভিক্ষা করে জীবন চলছে জহুরুন্নেসা ও হালিমা বেগমের। দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে থাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের সম্পর্কটাও বেশ মধুর। নানীর মতোই আপন। আর এ কারণেই বন্ধুদের সঙ্গে চায়ের আড্ডায়ও নানীদের জন্য জায়গা করে দেয় শিক্ষার্থীরা। দুই নানীও গল্প শোনান এই নাতি-নাতনিদের। এমনকি ঈদ বা বিশেষ উৎসব কিংবা বিপদ আপদের দিনে নানীর পাশে দাঁড়ান শিক্ষার্থীরা। জহুরুন্নেসা জানান, মুক্তিযুদ্ধের পর জীবিকার তাগিদে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার রূপপাত গ্রাম থেকে রাজশাহী চলে আসে তার পরিবার। এরপর থেকে স্টেশনের বস্তিতেই থাকেন তারা। হালিমা বেগম তার আপন বোন না হলেও আত্দার সম্পর্ক তাদের। জহুরুন্নেসার স্বামী মারা গেছেন বহু আগে। অসচ্ছলতার বোঝা মাথায় নিয়ে সন্তানদের বড় করেছেন। অথচ সেই সন্তানদের কাছেই আজ তিনি বোঝা। তাই পেটের দায়ে নামতে হয়েছে ভিক্ষার ঝুলি হাতে। তিন বেলার খাবার আর বস্তিতে ঘর ভাড়া বাবদ ১২০০ টাকা দিতে হিমশিম খেতে হয় তাদের। আর ক্যাম্পাস বন্ধ হলে তো কথাই নেই! রীতিমতো বেঁচে থাকাই যেন দুষ্কর হয়ে পড়ে।

 

 

সর্বশেষ খবর