সিলেট নগরীতে বাসার ভেতরেই সন্তানসহ খুন হন রোকেয়া বেগম। জানা গেছে, তাকে মারধর করে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়েছিল ছাত্রদল কর্মী পাপলু ও সুমন। পরে বিষয়টি স্থানীয় মুরব্বিদের নজরে আনেন বাসার মালিক। বিষয়টি মীমাংসা না হওয়ায় রোকেয়াকে থানায় সাধারণ ডায়রি করারও পরামর্শ দেন।
প্রসঙ্গত, রবিবার সকালে নগরীর মিরাবাজার খাঁর পাড়া মিতালি ১৫/জি বাসার ভেতরে বিউটিশিয়ান রোকেয়া বেগম ও তার ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী রবিউল ইসলাম রোকনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এক বছর থেকে ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে রোকেয়া ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন।
সূত্র মতে, রোকেয়া বেগমের বাসায় তানিয়া বেগম নামে এক গৃহকর্মী কাজ করতো। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে মোবাইল চুরির অভিযোগে তানিয়াকে বাসা থেকে তাড়িয়ে দেন রোকেয়া। এর জের ধরে তানিয়ার ভাই তানিমের নেতৃত্বে ছাত্রদল কর্মী সুমন ও পাপলুসহ কয়েকজন যুবক এসে রোকেয়াকে মারধর ও তার দুইটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যান।
বিষয়টি বাসার মালিক সালমান আহমদ ওই এলাকার বাসিন্দা ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সিলেট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান জামিল, খারপাড়া সস্ত্রাস প্রতিরোধ ও উন্নয়ন কমিটির সদস্য আলী হায়দারসহ স্থানীয় মুরব্বিদের জানান। বিষয়টি মীমাংসার জন্য মুরব্বিরা সালমানের বাসায় বৈঠক করেন। তবে বিষয়টি মীমাংসা না হওয়াতে এ সময় রোকেয়াকে মুরব্বিরা থানায় সাধারণ ডায়রি করার পরামর্শ দেন। এছাড়াও তারা রোকেয়া বেগমকে বাসা পরিবর্তনের পরামর্শ দেন।
এ ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন রোকেয়া। ফোনে তার ছোট বোনের স্বামী ফারুক আহমেদকে নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি জানিয়ে বাসা পরিবর্তন করার কথাও জানান।
এ ব্যাপারে জানতে রবিবার রাত ১০টার দিকে ছাত্রদল কর্মী পাপলু ও সুমনের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তারা ফোন রিসিভ করেনি।
স্থানীয় বাসিন্দা ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সিলেট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান জামিল ও খারপাড়া সস্ত্রাস প্রতিরোধ ও উন্নয়ন কমিটির সদস্য আলী হায়দার জানান, বাসার মালিক তাদের বিষয়টি জানান। তারা রোকেয়া বেগমকে থানায় সাধারণ ডায়রি করার পরামর্শ দেন। তবে বৈঠকের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তারা।
শুক্রবার রাত থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। ফোনে যোগাযোগ করতে না পেরে রবিবার সকালে রোকেয়া ছোট ভাই জাকির তার বাসায় আসেন। দরজায় শব্দ করার পর ভেতর থেকে শব্দ না পেয়ে বাসা খুলতে তিনি মালিকের সাহায্য চান। পরে বাসার মালিকসহ তিনি পেছনের জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখেন ভেতরে রোকেয়া বেগমের রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে এবং ভেতরে তার শিশুকন্যা রাইসা কান্নাকাটি করছে। পরে পুলিশ এসে তাদের লাশ উদ্ধার করে এবং রাইসাকে তাদের হেফাজতে নিয়ে যান।
বিডি প্রতিদিন/২ এপ্রিল, ২০১৮/ফারজানা