সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বিশ্বস্থ ও আস্থাভাজন ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। অর্থমন্ত্রী থাকাকালে সিলেটের উন্নয়নে দু'হাতে টাকা ঢেলেছেন মুহিত। সেই টাকা দিয়ে নগরীর উন্নয়ন করেছেন আরিফ।
অর্থমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত অর্থে সিলেট নগরীর উন্নয়ন হলেও তার খুব একটা স্মারকচিহ্নও রাখেননি আরিফ। পুরোটাই নিজের কৃতিত্ব বলে চালিয়ে দিয়েছেন তিনি। অবশ্য এনিয়ে অর্থমন্ত্রী মুহিতের কোন মাথাব্যাথাও ছিল না। কাজ হলেই হলো। তিনি উন্নয়ন দেখতে চেয়েছেন।
গত পাঁচ বছরে সিলেট নগরীতে উন্নয়নের জোয়ার হয়েছে স্লোগান তুলে সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে নগরবাসী আবারও নির্বাচিত করেন আরিফকে। অর্থমন্ত্রী মুহিতের বরাদ্দে উন্নয়ন হলেও তার সুফল ঘরে তুলতে পারেনি আওয়ামী লীগ।
সিটি নির্বাচনের সময় উন্নয়নের স্লোগান উঠলেও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেই স্লোগান ছিল ম্লান। খোদ অর্থমন্ত্রীর আপন ছোট ভাই ড. মোমেন প্রার্থী হয়েও নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়েছে। নগরীর উন্নয়নে মুহিতের ভূমিকা কী ছিল তা ভোটারদের বোঝানো বেশ কষ্টসাধ্য হয়েই দাঁড়িয়েছিল।
নির্বাচনের আগ পর্যন্ত আরিফুল হক চৌধুরীও ছিলেন ‘সেফ জোনে’। অনেক কাজই আটকে রেখেছিলেন তার দল বিএনপি ক্ষমতায় আসার অপেক্ষায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার সেই আশা পূরণ না হলেও দমে যাননি আরিফ।
নির্বাচনের পরপরই তিনি ছুটে যান সিলেট-১ আসনের বিজয়ী প্রার্থী ড. এ কে আবদুল মোমেনের বাসায়। কুশল বিনিময় করেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও ড. মোমেনের সাথে। এরপর ড. মোমেন পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর অনেকটা গোপনেই সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে বাসায় দিয়ে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান আরিফ। এনিয়ে নিজের দলের মধ্যেও সমালোচিত হন আরিফ।
সাবেক অর্থমন্ত্রী বা বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হাফিজ কমপ্লেক্সের বাসায় যাওয়া এখন আরিফের জন্য নতুন কিছু নয়। দলের নেতাকর্মীরাও এখন সেটা নিয়ে খুব একটা সমালোচনার আওয়াজ তুলেন না। কিন্তু মনোক্ষুন্ন হন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার সংক্ষিপ্ত সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন সিলেট আসেন। সকালেই মোমেনের সাথে দেখা করতে তার বাসায় ছুটে যান মেয়র আরিফ। কথা হয় অনেকক্ষণ। সিলেট নগরীর উন্নয়ন নিয়ে কয়েকটি প্রকল্পের কথা বলেন আরিফ। মনযোগ দিয়ে শুনেন ড. মোমেনও। আশ্বাস দেন সাধ্যমতো সেগুলো বাস্তবায়নে সহযোগিতার। এ সময় ড. মোমেনের বাসায় মেয়র আরিফকে বেশ হাস্যোজ্জ্বলই দেখাচ্ছিল।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন