শিরোনাম
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১৩:১২

লেখক হয়ে উঠার গল্প শোনালেন সমরেশ মজুমদার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

লেখক হয়ে উঠার গল্প শোনালেন সমরেশ মজুমদার

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার। তিনি বাংলাসাহিত্যের এক নন্দিত লেখক। ইতিহাস চেতনার পাশাপাশি সমাজ ও জীবন বাস্তবতার অনন্য মিশেলে বাংলাসাহিত্যকে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য সব সাহিত্যসৃষ্টি। ওপার বাংলার নন্দিত এই লেখক এবার মুখোমুখি হলেন সিলেটের লেখক-পাঠকদের। গল্পের সুরে, হাস্যরসে শোনালেন তার জীবন-বাস্তবতা এবং তার সৃষ্ট সাহিত্যকর্মসহ বিভিন্ন বিষয়ের কথা।

শুক্রবার সিলেটে এই ‘বই প্রকাশের গল্প’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে নিজের লেখক হয়ে উঠার গল্পসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি।

ঘণ্টাব্যাপি বক্তব্যে নিজের শুরু বিষয়ে সমরেশ মজুমদার বলেন, মঞ্চনাটকের প্রতি তার খুব টান ছিল। প্রথম গল্পও লেখেন যে নাট্যদলটির সাথে তিনি জড়িত ছিলেন সেই দলের একটি চিত্রনাট্য রচনার জন্য। যার নাম ছিলো ‘অন্তর আত্মা’। কিন্তু সেটি নিয়ে মঞ্চদলটি নাটক করায় সেটি ছাপানোর জন্য 'দেশ' পত্রিকায় পাঠান তিনি। ছাপেনি তারাও। পরে 'দেশ' পত্রিকার তৎকালীন সম্পাদক বিমল কর’র সাথে যোগাযোগ হলে তিনি গল্পটি ছাপান। গল্প ছাপানোর ফলে পত্রিকা থেকে তাকে ১৫ টাকা দেয়া হয়। সেই টাকা তিনি বন্ধুদের নিয়ে কফি খেয়ে উড়িয়ে দেন। এরপর এই খাওয়ার লোভে বন্ধুরা তাকে আরও লেখার জন্য তাগিদ দেন। সেই কফি খাওয়া ও খাওয়ানোর আনন্দ থেকেই সাহিত্যিক হিসেবে পর্দাপণ করেন সমরেশ মজুমদার।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত লেখক পাঠকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন সমরেশ মজুমদার। উঠে আসে ‘সাতকাহনে’র দীপাবলির কথাও। বলেন, আমার বাড়ির পাশে বারো বছরের একটি মেয়েকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের দিন সকালে সে আমার হাত ধরে বলেছিলো, কাকু, আমাকে বাঁচাও। অনেক চেষ্টা করেও সেদিন মেয়েটির বিয়ে ঠেকাতে পারিনি। তবে বিয়ের আটদিন পর বিধবা হয়ে মেয়েটি ফিরে এসে আমাকে বলেছিলো, কাকু, আমি বেঁচে গেলাম। এখান থেকে দীপাবলি চরিত্রটি তৈরি হয়। আমরা পুরুষরা মেয়েদের উপর নির্ভরশীল জীবনযাপন করি। কিন্তু দীপাবলি ধরনের মেয়ে না। কোন পুরুষই তাকে স্ত্রী হিসেবে চান না। আর মেয়েরা তাকে জীবনের আদর্শ মনে করে। এটাই এ চরিত্রের সার্থকতা।

দীর্ঘ এই আলাপচারিতায় বারবারই উঠে আসে তার উপন্যাস-ত্রয়ী ‘উত্তরাধিকার’, ‘কালবেলা’ ও ‘কালপুরুষ’ প্রসঙ্গ। উপন্যাস-ত্রয়ী নিয়ে তিনি বললেন, এই তিনটির মধ্যে প্রথম দুটি অনেকটা জোর করে লেখা। মন থেকে লেখেননি। বলা যেতে পারে, বাধ্য হয়েই লিখেছেন। ‘উত্তরাধিকার’ প্রকাশ পরে পাঠকদের আগ্রহের পরে প্রকাশক সাগরময় ঘোষের নির্দেশে বাকি দুই পর্ব লেখা হয়।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর