১ জুন, ২০২০ ২০:৪৭

ছয় হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে অ্যাম্বুলেন্সেই নারীর মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট:

ছয় হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে অ্যাম্বুলেন্সেই নারীর মৃত্যু

একে একে সিলেট নগরীর ছয়টি বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছেন এক নারী। শ্বাসকষ্ট থাকায় করোনা আক্রান্ত সন্দেহে নানা অজুহাতে ওই রোগীকে ফিরিয়ে দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কোনো হাসপাতালই ভর্তি দেয়নি তাকে। অবশেষে স্বজনরা যখন তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান তখন চিকিৎসকরা জানান তিনি আর বেঁচে নেই। হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যান মনোয়ারা বেগম (৬৩) নামের ওই নারী। তিনি নগরীর কাজিরবাজারের বাসিন্দা। 

জানা গেছে, মনোয়ারা বেগম দীর্ঘদিন ধরে অ্যাজমা রোগে ভুগছেন। রবিবার রাত ১২টার দিকে তার শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি পেলে অ্যাম্বুলেন্সে করে প্রথমে তাকে নগরীর সোবহানীঘাটস্থ আল-হারামাইন হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। আইসিইউ বেড খালি নেই অজুহাত দেখিয়ে ওই রোগীকে অ্যাম্বুলেন্স থেকেই নামায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেও অক্সিজেন নেই অজুহাত দেখিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর রোগীর স্বজনরা তাকে নিয়ে আসেন সোবহানীঘাটস্থ মা ও শিশু হাসপাতালে। সেখান থেকেও তাদেরকে ফিরতে হয় নিরাশ হয়ে। পরে মনোয়ারা বেগমের গন্তব্য হয় নগরীর তালতলাস্থ পার্ক ভিউ হাসপাতালে। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রোগীকে রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার বুকের এক্স-রে করা হয়। এরপর ভর্তি না দিয়ে তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন সেখানকার চিকিৎসকরা। তখন মনোয়ারা বেগম প্রচণ্ড বুকের ব্যথায় কাতরাতে থাকলে স্বজনরা তাকে ভর্তির জন্য অনুরোধ জানান। কিন্তু রাগীব রাবেয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও তাকে ভর্তি করতে অপারগতা প্রকাশ করে। শেষমেশ রাত আড়াইটার দিকে তাকে নিয়ে আসা হয় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তখন জানান মনোয়ারা বেগম আর বেঁচে নেই। অ্যাম্বুলেন্সেই তিনি মারা গেছেন। 

এদিকে, দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার সরকারি নির্দেশনা থাকার পরও শংকটাপন্ন অবস্থায় সিলেটের কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল ভর্তি না করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন মারা যাওয়া রোগীর পরিবারের স্বজনরা।

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর