৫ জুলাই, ২০২২ ১৬:০৪
মৌলভীবাজার

দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় বানভাসী মানুষের ঈদ আনন্দ ম্লান

সৈয়দ বয়তুল আলী, মৌলভীবাজার

দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় বানভাসী মানুষের ঈদ আনন্দ ম্লান

মৌলভীবাজারের হাওর অঞ্চলের পানিবন্দী মানুষ দফায় দফায় ত্রিমুখী ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। যার কারণে আসন্ন ঈদুল আজহার আমেজ নেই বানভাসী মানুষের মধ্যে। গত বোরো মৌসুমে দীর্ঘমেয়াদি খরায় জেলার হাওরগুলোতে কৃষকের রোপণকৃত ব্রি-২৮ জাতের ধানে চিটা ধরায়  লোকসানে পড়েছিলেন হাওর পারের প্রান্তিক কৃষক ও বর্গা চাষীরা। তেমনি বোরো উত্তোলনের সময় টানা বৃষ্টির কারণে ধান নায্যমূল্যে বিক্রি করতে না পেরে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন কৃষকরা। সেই সাথে দীর্ঘ দিনের বন্যায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন জেলার কুলাউড়া, জুড়ি, বড়লেখা এবং রাজনগর উপজেলার প্রায় ৩ লক্ষ মানুষ। বন্যায় তাদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হাওর অঞ্চলের ৭০/৮০ শতাংশ ঘরে এখনও পানি। অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে আবার কেউ কেউ ঘরে পানির মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। কিছু পরিবার উজান এলাকায় আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। যাতায়াতের প্রতিটি রাস্তা এখনও পানির নিচে। স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, ঈদগাহ ও মন্দির তলিয়ে গেছে। প্রতিটি হাটবাজার এখনও পানির নিচে। মানুষের চলাচলের কোনো জায়গা নেই। এছাড়াও বানভাসী মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ ড়ায়রিয়া, চর্ম, জ্বর, চোখের ভাইরাসসহ বিভিন্ন রোগ।

বন্যায় বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাওর পারের মৌসুমী খামারিরা। এমন পরিস্থিতিতে তাদের মধ্যে ঈদ আনন্দের চেয়ে দুশ্চিন্তায় পরিণত হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভাবের কারণে এবারের ঈদে মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকেই কোরবানি দিতে পারছেন না। আবার কারো কাছে হাত পাততে পারছেন না। অন্যদিকে পানিবন্দী এলাকায় কাজ না থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন দিনমজুররা। সব মিলিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন জেলার নিন্মাঞ্চলের বানভাসী মানুষ।

কুলাউড়া উপজেলার জাব্দা গ্রামের বাসিন্দা মো. রিয়াজুর রহমানসহ অনেকেই বলেন, দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কারণে আমাদের মাঝে কোনো ঈদ আনন্দ নেই। নতুন কাপড় কেনা তো দূরের কথা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস জোগানোও সম্ভব হচ্ছে না।

হাওর পারের প্রান্তিক ও বর্গাচাষীদের সাথে কথা হলে তারা জানান, আমাদের মাঝে এবছর ঈদের কোনো আনন্দ নেই। আমরা এ বছর ত্রিমুখী ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। আমাদের একমাত্র সম্বল বোরো ধান। এ বছর বৃষ্টি থাকার কারণে ধান শুকাতে না পারায় কাঁচা ধান পানির দামে বিক্রি করতে হয়েছে।

তারা আরও বলেন, বন্যা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্যহারে সরকারি ত্রাণসামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে না। 


বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর