প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পর্যটন শহর শ্রীমঙ্গলে এবার ঈদে পর্যটক আসেননি। উপজেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলো অনেকটা পর্যটক শূন্য ছিল। স্থানীয় কিছু মানুষের আনাগোনা ছাড়া দেশের অনান্য স্থান থেকে আসা কোনো পর্যটক দেখা যায়নি। তাই খালি পড়েছিল এখানকার পর্যটন কেন্দ্রগুলো।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, সিলেট আকস্মিক বন্যার কারণে শ্রীমঙ্গলে পর্যটকরা আসছেন না। তাছাড়া পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু কিছু সংখ্যক পর্যটক দক্ষিণাঞ্চলমুখী হয়ে গেছেন।
এদিকে পর্যটকরা না আসায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন এ শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। প্রায় ৯০ শতাংশ খালি পড়ে আছে এখানকার অধিকাংশ রির্সোট, হোটেল-মোটেলগুলো।
জানা যায়, প্রতি বছরই ঈদের ছুটিতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার পর্যটক এখানে আসেন। গত রমজানে ঈদের দিনে শুধু লাউয়াছড়ায় ২ হাজার ৩৭৪ জন পর্যটক প্রবেশ করেছিলেন।
রবিবার (১০ জুলাই) ঈদের দিন বিভিন্ন পর্যটন স্পটে গিয়ে পর্যটকদের দেখা মেলেনি। কোথাও পর্যটকবাহী গাড়ির ছোটাছুটি ছিল না। সুনসান নিরবতা ছিল বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্র রাস্তার মোড়ে। সবুজ চা বাগনগুলোতে ছিল না মানুষের কোলাহল। ছিল না ছবি তুলার প্রতিযোগিতা। লাউয়াছড়া প্রবেশদ্বারেও ছিল না পর্যটকদের জটলা। সেখানকার টিকিট কাউন্টার থেকে জানা যায়, ঈদের দিন মাত্র ৪২৯ জন পর্যটক লাউয়াছড়ায় প্রবেশ করেছেন। পর্যটক চোখে পড়েনি বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা কেন্দ্র, বধ্যভূমি ৭১, নীল কণ্ঠ চা কেবিনে।
গ্রীনলিফ গেস্ট হাউজের মালিক এসকে দাশ সুমন বলেন, এই ঈদে ভয়াবহ দুর্যোগে আছে শ্রীমঙ্গলের পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। পর্যটক শূন্যের কোটায়। এমনটা চলতে থাকলে অচিরেই মুখ থুবড়ে পড়বে এখানকার পর্যটন শিল্প। নিঃস্ব হবে এই শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
এসকেডি আমার বাড়ি রিসোর্টের মালিক সজল দাশ বলেন, ‘খুব করুণ অবস্থা। আমার রিসোর্টে ৪০টি রুমের মধ্য মাত্র ২টি রুম ভাড়া হয়েছে। এমনটা হবে কখনো ভাবনায় আসেনি।’
পর্যটন সেবা সংস্থার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গ্র্যান্ড সেলিম রিসোর্টের মালিক সেলিম আহমেদ বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে শ্রীমঙ্গলে পর্যটক না আসার প্রধান কারণ হলো পদ্মা সেতু খুলে দেওয়া। এখন আমাদের কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তারপরও যদি এই পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তা হলে প্রশাসনকে ভাবতে হবে কীভাবে শ্রীমঙ্গলের পর্যটনকে আকর্ষণীয় করা যায়।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা
