১২০ থেকে দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে এবার হবিগঞ্জের বাহুবলে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন চা শ্রমিকরা।
শনিবার দুপুর ১২ টার দিকে উপজেলার বাগানবাড়ি এলাকায় তারা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এসময় মহাসড়কের অবস্থান করে বাহুবলের ফয়জাবাদ, রশীদপুর, বৃন্দাবন ও কামাইছড়াসহ ৫টি বাগানের হাজার হাজার শ্রমিক। যার ফলে মহাসড়কের দু’পাশে শত শত যানবাহন আটকা পরে। সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের।
খবর পেয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহ নওয়াজ গাজী মিলাদ, বাহুবল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহুয়া শারমিন ফাতেমাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের শান্ত করেন। এছাড়াও বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে দেয়া হবে বলে আশ্বস্ত করলে দুপুর ২টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করে চা শ্রমিকরা। এছাড়াও ১২০ টাকা থেকে দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে হবিগঞ্জের ২৪টি বাগানে ৮ম দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করেছে শ্রমিকরা।
সকার থেকে বিভিন্ন বাগানের কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। এসময় তারা ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে স্লোগান দেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকারও ঘোষণা দেন তারা।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান জানান, আপাততো শ্রমিকদের মজুরি ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই মজুরিতে কাজে ফিরতে শ্রমিক নেতাদের সাথে আজ বিকালে আলোচনায় বসা হবে।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নৃপেন পাল বলেন, ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরির দাবিতে চা শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে ৯ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন শ্রমিকরা। এই চারদিন শ্রমিকরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি করেন। এতে তাদের দাবি আদায় না হওয়ায় ১৩ আগস্ট থেকে পূর্ণদিবস এ কর্মবিরতি পালন করেন শ্রমিকরা। এদিন চা শ্রমিকরা চান্দপুর এলাকায় পুরাতন ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে সেখান থেকে হাজার হাজার চা শ্রমিক পায়ে হেঁটে চুনারুঘাট পৌর এলাকায় প্রধান সড়কে অবস্থান নেন এবং সেখানে সড়ক অবরোধ করে পথসভা করেন।’
'সমস্যা সমাধানে ১৬ আগস্ট শ্রীমঙ্গলের লেবার হাউজে সকাল ১১টায় শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করেন। আমরা তার কাছে আমাদের বিভিন্ন সমস্যা ও দাবি তুলে ধরি। তিনি গুরুত্ব সহকারে আমাদের কথাগুলো শুনেন এবং আমাদের আশ্বস্ত করেন। তখন শোকের মাস বিবেচনা করে এবং সরকারের প্রতিনিধি দল যেহেতু আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন তাই ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ ও রাজপথের আন্দোলন স্থগিত করি।'
গত বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকায় শ্রম অধিদপ্তরে চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও মালিক সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করেন শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন। কিন্তু তখনও আমাদের মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত না নেয়ায় গত বৃহস্পতিবার মাধবপুরের জগদীসপুরে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকরা।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত