চট্টগ্রামে টানা বর্ষণের পর পানি নামলেও ক্ষতবিক্ষত সড়ক এখন খড়গে পরিণত হয়েছে। ছোট-বড় খানাখন্দে ভরে গেছে নগরের অধিকাংশ সড়ক। ফলে ক্ষতবিক্ষত সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল দুরূহ হয়ে পড়েছে। সঙ্গে চরম ভোগান্তি-দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারিদের। দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী ও সাধারণ মানুষ।
তবে বৃষ্টির পানি ছাড়াও নগরের অনেক স্থানে ওঠে জোয়ারের পানি। এসব পানি একবার ওঠলে টানা কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী হয়। ফলে জোয়ারের পানি ওঠে এমন এলাকার বাসিন্দাদের মানুষের অন্তহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
নগরবাসীর অভিযোগ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) সারা বছর জুড়েই সড়ক সংস্কার-উন্নয়ন করে। কিন্তু কাজের মান ঠিক না থাকায় অল্প কিছুদিন পরই আবার সড়কের বিটুমিন ওঠে যায়। এক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারের দায়ও কম নয়। তাই চসিক যদি একটু সচেতন, দায়িত্বশীল ও নিয়মিত নজরদারির মাধ্যমে ঠিকাদার থেকে কাজ আদায় করে, তাহলে কাজের মান আরো অনেক ভাল হতো। বর্ষায় সাধারণ মানুষের এত ভোগান্তি হত না। তদুপরি উন্নয়ন কাজে কাউকে কষ্ট না দিতে চসিক মেয়রের কঠোর নির্দেশনা থাকলেও তা মানছে না দায়িত্বশীলরা।
চসিকের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘অতি বর্ষণে নগরের বেশ কিছু সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রুটিন ওয়ার্কের অংশ হিসাবে এসব সড়ক মেরামতের কাজ চলছে। তাছাড়া বর্তমানে বেশ কিছু বড় বড় সড়ক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এসব কাজ শেষ হলে নগরে আর ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক থাকবে না।’
জানা যায়, গত সোমবার রাত থেকে গত মঙ্গলবার দিনভর টানা বর্ষণে নগরের সিংহভাগ নি¤œাঞ্চল জলমগ্ন হয়। পতেঙ্গার আবহাওয়া মঙ্গলবার বিকাল তিনটা পর্যন্ত ৯০ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করেছিল। ফলে নগরের অধিকাংশ সড়ক ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। বিশেষ করে নগরের আগ্রাবাদ এলাকার বিভিন্ন সড়ক, হালিশহর, বড়পুল, ছোটপুল, মুরাদপুর, জিইসি মোড়, চকবাজার কাপাসগোলা মোড়, পাথরঘাটা রোড, মুরাদপুর-অক্সিজেন সড়ক, ২ নং গেইট-বায়েজিদ সড়ক, আগ্রাবাদ নিমতলা রোড। তাছাড়া কিছু দিন আগেও ভাল ছিল এমন সড়কও অতিবর্ষণে বিটুমিন উঠে যায়।
চসিকের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম শহরে মোট এক হাজার ১০০ কিলোমিটার সড়ক আছে। এর মধ্যে অ্যাসফল্ট (পিচঢালা) ৬২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৭ দশমিক ২০ মিটার প্রস্থর সড়ক আছে ১১৪০টি। ২৪৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৩ দশমিক ৫৫ মিটার প্রস্থের কংক্রিট সড়ক আছে ১১০৯টি। ৫৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৩ দশমিক ৫০ মিটার প্রস্থের ব্রিকসলিং সড়ক আছে ২৩৫টি। ৪৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার প্রস্থের কাঁচা সড়ক আছে ২৪৫টি।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার