সিলেট মহানগরীর অলি-গলির রাস্তা করা হচ্ছে বর্ধিত। কাজ চলছে দিন-রাত। রাস্তার কাজের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঝুলন্ত বিদ্যুতের তারও নেয়া হচ্ছে মাটির নিচ দিয়ে। এগারো কেভির লাইন মাটির নিচ দিয়ে নেয়ার ফলে নগরীতে থাকবেনা ঝুলন্ত বিদ্যুতের তার। চলমান এ উন্নয়ন কাজ যখন চলছে নগরীতে তখন ঘটলো এক তাল কাণ্ড।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও জিন্দাবাজারের ব্যাবসায়ী, সাবেক মেয়র প্রার্থী এহসানুল হক তাহের মধ্যে কথা-বার্তার রেশ ধরে বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়িয়েছে। তাহের নিজের নিরাপত্তা চেয়ে সিলেট কোতোয়ালী থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন আরিফের বিরুদ্ধে।
গত মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় জিন্দাবাজারের রাস্তা বর্ধিত করার কাজ পরিদর্শনে আসেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এসময় লতিফ সেন্টারের সামনে জিন্দাবাজার পয়েন্টের আশাপাশের দোকান মালিক ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত হন।
মেয়র আরিফ উপস্থিত মানুষের সামনে চলমান কাজ সম্পর্কে অবহিত করেন। এসময় মেয়র বলেন, সরকারি নিয়মানুযায়ী এই রাস্তা ৮০ ফিট করার কথা। কিন্তু রাস্তা বড় করা হচ্ছে ৬০ ফিট। এসময় বাঁধ সাধেন জিন্দাবাজারের ব্যাবসায়ী ও বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী এহসানুল হক তাহের। উপস্থিত সবাই মেয়রের কাছে দাবি করেন তাড়াতাড়ি চলমান কাজ সম্পন্ন করার জন্য।
কিন্তু তাহের মেয়র আরিফকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, রাস্তা বড় করার জন্য সরকারি প্ল্যান দেখাতে হবে। তাহেরের কথার একপর্যায়ে মেয়র আরিফ ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘দোকান ভাঙ্গবো, পারলে আটকাও’।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, জিন্দাবাজারের হাজারী মার্কেটের পার্শ্ববর্তী মেইন রোডের পাশে তাহেরের ৫টি দোকান রয়েছে।
ওই দিন রাতেই তাহের নিজের নিরাপত্তা চেয়ে কোতোয়ালী থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন। দোকান ভাঙ্গবো, পারলে আটকাও এ কথাকে তাহের মেয়রের হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তাহেরের এই জিডি করাকে কেন্দ্র নগরীতে এখন চলছে নানা আলোচনা। সংবাদ মাধ্যমে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশিত হলে নগরবাসী এটাকে তিল থেকে তাল কাণ্ড হিসেবে মনে করেন।
এ ব্যাপারে তাহের বলেন, মেয়র সেদিন উগ্র আচরণ করেছেন। সেই আচরণ আমাকে হতবাক করেছে। তিনি বলেন, আমি সেদিন ভয়ে ছিলাম, ‘যদি তাইন আইয়া আমারে চড় মারি দেইন’। তাহের আরও বলেন, যদি মেয়র দোকান ভাঙ্গেন তাহলে ৫ ভাই ও ২ বোন মিলে মোট সাতটি মামলা দায়ের করবেন এর বিরুদ্ধে।
লতিফ সেন্টারের এক ব্যবসায়ী বলেন, এখানে এমন কিছু ঘটেনি যাতে তাহেরকে জিডি করতে হবে। এটা হাস্যকর বিষয় বলে তিনি মনে করেন। ওই ব্যবসায়ী আরও বলেন, সেদিন উপস্থিত অন্য কেউ রাস্তা বাড়ানোর বিরুদ্ধে কথা বলেননি। ঘটনার সময় ছিলেন সাবেক কাউন্সিলর জামাল আহমদ। তিনিও গঠনমূলক বক্তব্য রাখেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মেয়র আরিফের মুঠোফোনে চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত