দেশজুড়ে পিঁয়াজের মূল্য নিয়ে চলছে অস্থিরতা। এমন সময়ে পিঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ব্যবসায়ীদের নিয়ে আয়োজন করেন মতবিনিময় সভার। কিন্তু ওই সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী চট্টগ্রামের আটজন আমদানিকারকের কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন। সভায় আমদানিকারকরা না থাকলেও পিঁয়াজের পাইকারী আড়তদার ও কমিশন এজেন্টরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী চট্টগ্রামে আটজন পিঁয়াজ আমদানিকারকের নাম পাওয়া গেছে। সে অনুযায়ী তাদের সভায় আামন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা কেউই আসেনি। তারা কেন আসেনি এবং অন্য কোনো ঠিকানা ব্যবহার করে পিঁয়াজ আমদানি করেছেন কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। যদি তারা পিঁয়াজ আমদানি করে থাকে, তাহলে তাদের খুঁজে বের করে অভিযান চালানো হবে।’
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘পাইকারী ও খুচরা দোকানে মূল্য তালিকা প্রদর্শন বাধ্যতামূলক। কমিশন এজেন্টরা কার কাছ থেকে পিঁয়াজ কিনছে অবশ্যই সেটার রশিদ থাকতে হবে। কমিশন এজেন্টদের দোকানে অবশ্যই আমদানিকারকের নাম ফোন নম্বর ও রশিদ রাখতে হবে। প্রয়োজনে প্রশাসন ও মন্ত্রণালয় আমদানিকারকের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করবে।’
তিনি বলেন, ‘পিঁয়াজ নিয়ে অদৃশ্য ব্যবসা করা যাবে না। অদৃশ্য ব্যবসা মানেই কালোবাজারি। এটা হলে অবশ্যই অ্যাকশন নেওয়া হবে। আমরা ব্যবসায়ীদের প্রতিপক্ষ নই, বরং পরিপূরক। কিন্তু যখন মানুষের নাভিশ্বাস ওঠে তখনই আমরা ব্যবস্থা নেই। অতি মুনাফা চাই না, কারও ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হোক সেটাও চাই না।’
ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘পিঁয়াজ আমদানিতে প্রতিবন্ধকতা সুমহ নিরসনে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে নগর, জেলা ও মহাসড়কে পিঁয়াজের গাড়ি রাত-দিন যাতে চলতে পারে, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পিঁয়াজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে খালাসের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর ও টেকনাফ স্থলবন্দরকে অনুরোধ করা হচ্ছে।’
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘হয়তো আপনারা অতি মুনাফা করতে না পেরে চট্টগ্রামমুখী পিঁয়াজের ট্রাক ফেরাচ্ছেন, প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পিয়াজসহ যেকোনো পণ্য নিয়ে কারসাজি কোনো মতেই মানা হবে না।’
সভায় উপস্থিত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কামাল হোসেন, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার মো. তৌহিদুল ইসলাম, খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ছগীর আহমদ, চট্টগ্রাম চেম্বার পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ কাঁচাপণ্য আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, হামিদ উল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস ও ক্যাবের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার