২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ১৬:০৪

চসিক নির্বাচন: পরিকল্পিত নগর গড়াই চ্যালেঞ্জ মেয়র প্রার্থীদের

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চসিক নির্বাচন: পরিকল্পিত নগর গড়াই চ্যালেঞ্জ মেয়র প্রার্থীদের

ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম মহানগরের প্রায় ৭০ লাখ বাসিন্দার স্বপ্ন একটি পরিকল্পিত নগর। সিটি কর্পোরেশনের প্রতিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীরাও এ স্বপ্নের সারথী হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু বিজয়ী হওয়ার পর উবে যায় নির্বাচন পূর্ববর্তী প্রতিশ্রুতি। ফলে পরিকল্পিত নগর বাস্তবায়ন থেকে যায় অধরা। নগরবাসীও নির্বাচনের পর নির্বাচন স্বপ্ন পূরণে আশায় বুক বেঁধে থাকেন বলে জানা যায়।  

অভিযোগ আছে, নির্বাচনের সময় প্রার্থীরা ভোটারদের সমর্থন আদায় করতে পরিকল্পিত নগর বাস্তবায়নের কথা বলে নির্বাচনী বৈতরণী পার করার চেষ্টা করেন। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর প্রায় সব প্রতিশ্রুতি অনেকেই ভুলে যান। ফলে ভোটারদের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়।     

জানা যায়, ১৯৯০ সালের ৩১ জুলাই ‘চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল’ থেকে নাম পরিবর্তন করে ‘চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন’ করা হয়। তৎকালীন সরকার  মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রথম মেয়র নিযুক্ত করে। এরপর ১৯৯৪ সালের প্রথম নির্বাচন পর্যন্ত মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন  করেন। 

১৯৯৪ সালের প্রথম নির্বাচনে প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৯ ও ২০০৫ সালেও মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। ২০১০ সালে বিএনপি সমর্থিত মোহাম্মদ মনজুর আলম এবং ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আ জ ম নাছির উদ্দিন মেয়র নির্বাচিত হন। 

টানা ২৬  বছর নির্বাচিত তিনজন মেয়র দায়িত্ব পালন করলেও জনপ্রত্যাশিত পরিকল্পিত নগর অধরাই থেকে যায়। সর্বশেষ আসন্ন চসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনিত মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে এসে গত বুধবার রেল স্টেশনে গণমাধ্যকে ‘পরিকল্পিত নগর গঠনের’ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। 
তবে বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন নির্বাচনের পরই বিলবোর্ড উচ্ছেদ, হকারদের শৃঙ্খলায় আনা, ফুটপাত আধুনিকায়নসহ গঠনমূলক কিছু কাজ করতে সক্ষম হয়েছিলেন।           

আওয়ামী লীগের মনোনিত মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘পরিকল্পিত নগর গড়াই আমরা অন্যতম চ্যালেঞ্জ। অতীতের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মেয়র, নগর পরিকল্পনাবিদ এবং নগরবাসীকে নিয়ে পরিকল্পিত ও আধুনিক নগর গড়তে আমি প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করব।’   

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমার প্রথম অগ্রাধিকার থাকবে একটি পরিকল্পিত নগর। দল মনোনয়ন দিলে এবং নির্বাচিত হলে এটি গড়ার লক্ষ্যে আমি সব ধরনের উদ্যোগ নেব।’    
জানা যায়, নগরের অন্যতম প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা। এটি এখনো নিরসন কিংবা নিয়ন্ত্রণে সম্ভব হয়নি। তবে বর্তমানে জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মেগা প্রকল্পের কাজ চলমান। সারা বছরের সমস্যা যানজট। এটি নিরসনের কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায় না। ফুটপাত পথচারিদের হলেও তা স্থানীয় ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ী এবং ব্যক্তির দখলে। এসব উদ্ধারে কার্যকর উদ্যোগ দৃশ্যমান নেই। নগরের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন বাড়লেও এসব ভবন ভাঙার উদ্যোগ নেই। ফলে ঝুঁকি থাকছেই। নগরের বাস-ট্রাকের শৃঙ্খলা আনতে অতিপ্রয়োজন একটি টার্মিনাল। দীর্ঘদিনেও একটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়নি। তবে বর্তমানে কুলগাঁও এলাকায় একটি টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
  
 

বিডি প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর