করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারি রূপ ধারণ করেছে। এমন কঠিন সময়ে বাণিজ্যিক রাজধানী করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় নেই অতি জরুরি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)। এবার সংকট শুরু হয়েছে নমুন পরীক্ষার কিটের। কিট সংকটে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজে (বিআইটিআইডি) নমুনা পরীক্ষা করা যাবে কিনা সংশয় দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, গত ২৫ মার্চ ঢাকার রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) থেকে বিআইটিআইডি ল্যাবে ৮৫০ কিট প্রদান করা হয়। পরে বিদেশি একটি সংস্থা থেকে আরও ১০০ কিট পাওয়া যায়। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির কাছে ছিল আরও ১০০ কিট। সব মিলিয়ে ১ হাজার ৫০টি কিটে এতদিন পরীক্ষা করে আসছিল। পরে বিআইটিআইডির আবেদনের প্রেক্ষিতে আইইডিসিআর ৯৬০টি কিট দেয়। তবে এসব কিট অস্পূর্ণ বলে জানা যায়।
ল্যাব সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একটি করোনার নমুনা পরীক্ষা সম্পন্ন করতে তিনটি ধাপে কাজ করতে হয়। কিন্তু আইইডিসিআর থেকে পাঠানো কিটগুলো দিয়ে সর্বশেষ ধাপে কাজ করার, অর্থাৎ পিসিআর মেশিনে কাজ করার জন্য। এর সঙ্গে আনুষাঙ্গিক কিছু উপাদান সামগ্রী দেয়া হয়নি। ফলে ৯৬০ টি অসম্পূর্ণ কিট দিয়ে আগামীকালের পরীক্ষা প্রায় অনিশ্চিত।
বিআইটিআইডি’র মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক শাকিল আহমেদ বলেন, ‘সরকারিভাবে মঙ্গলবার ৯৬০টি কিট দেওয়া হয়েছে। তবে তা সম্পূর্ণ কিট নয়। শুধু পিসিআর মেশিনে এ কিট ব্যবহার করা হয়। পিসিআর মেশিনে নমুনা দেয়ার আগে যেসব কাজ রয়েছে তা করার জন্য আরও কিছু কম্পোন্যান্ট প্রয়োজন তা দেয়া হয়নি। তাই নমুনা পরীক্ষা অনেকটা অনিশ্চয়তার মধ্যে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের ল্যাবটি বিদেশি ফান্ডের মাধ্যমে পরিচালিত। তাই আমাদের ল্যাবে সব সময় পিসিআরের মাধ্যমে গবেষণার কাজ করতে হয়। গবেষণার জন্য যেসব জিনিস রয়েছে সেখান থেকে কিছু দিয়ে হয়তো আর একদিন কাজ চালানো যাবে। কিন্তু প্রতিদিন যেভাবে ৯ থেকে ১০০ জনের নমুনা পরীক্ষা করি সেটা হয়তো করা যাবে না।’
জানা যায়, চট্টগ্রামে আইসিইউ সংকট শুরু থেকেই। এখন পর্যন্ত তা নিরসন হয়নি। গত ৩০ মার্চ সরকার জেনারেল হাসপাতালে ১০ শয্যার একটি আইসিইউ ওয়ার্ড বরাদ্দ করলেও তা এখনো প্রক্রিয়াধীন। এরই মধ্যে গত রবিবার ও সোমবার জেনারেল হাসপাতালে শ্বাসকষ্ট নিয়ে আসা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দুইজন রোগী আইসিইউ শয্যার অভাবে মারা যান। চট্টগ্রামে এবার শুরু হয়েছে কিট সংকট।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার