চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর সম্প্রসারণে সহযোগিতা করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জো-অ্যান ওয়াগনার এ আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। দূতাবাসের সহকর্মীদের সঙ্গে গত রবিবার ও সোমবার চট্টগ্রাম সফর করেন ওয়াগনার। এ সফরে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে আলাপকালে তিনি চট্টগ্রাম বন্দর সম্প্রসারণে সহযোগিতার ব্যাপারে তার দেশের আগ্রহের কথা জানান।
ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে জোরালো অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রতি সমর্থন জানাতে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ও তার সহকর্মীরা চট্টগ্রাম সফর করেন। ওয়াগনার চট্টগ্রাম বন্দরের সম্প্রসারণ পরিকল্পনা এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর অংশগ্রহণের সুযোগ ও লিঙ্গবৈষম্য নিরসন বিষয়ে সফল ব্যবসা পরিচালনাকারী নারী উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। এছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রে উৎপন্ন তুলা ব্যবহারের সম্ভাব্য সুযোগ খুঁজে দেখার অংশ হিসেবে পাহাড়তলী টেক্সটাইল অ্যান্ড হোসিয়ারি মিলসের পরিচালনাকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ওয়াগনার বন্দরের চেয়ারম্যান অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদকে বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানি অর্থনীতিতে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা থাকার কারণে যুক্তরাষ্ট্র চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন পরিকল্পনায় আগ্রহী। তিনি বলেন, সম্ভাব্যতা যাচাই জরিপ, কারিগরি সহায়তা ও পরীক্ষামূলক প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের মতো উচ্চ প্রবৃদ্ধিশালী বিকাশমান বাজারে অবকাঠামো প্রকল্পে সহায়তা দিতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি। জট কমানো ও কার্যক্ষমতা বাড়ানোসহ বিশেষ জ্ঞান, দক্ষতা ও ব্যবস্থা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো প্রস্তুত।
এক গোলটেবিল বৈঠকে চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্যরা ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতকে বলেন, সফলভাবে কোনো ব্যবসা পরিচালনা এমনিতেই কঠিন কাজ। তার ওপর উদ্যোক্তা নারী হলে তাকে বাড়তি প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়। বৈঠকে উদ্যোক্তারা বৈষম্য নিরসন এবং ব্যবসার প্রচার ও প্রসারে তাদের ব্যবহৃত পন্থাগুলো তুলে ধরেন। তারা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নারী স্বত্বাধিকারী ও পরিচালনাকারীদের ক্রমবর্ধমান অবদানের কথা উল্লেখ করেন।
ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ওয়াগনার বলেন, ‘চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বার অব কমার্সের সৃষ্টিশীল ও নিবেদিত নারীদের কর্মকাণ্ড এবং এতসংখ্যক প্রতিশ্রুতিশীল নারী উদ্যোক্তার জন্য তাদের সৃষ্ট দৃষ্টান্তগুলো দেখে আমি মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত। অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি উৎসাহিতকরণ এবং নারীসহ প্রথাগতভাবে কম প্রতিনিধিত্বশীল গোষ্ঠীর মধ্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারি বজায় রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ।’
ইস্পাহানি লিমিটেডের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান পাহাড়তলী টেক্সটাইল অ্যান্ড হোসিয়ারি মিলস বাংলাদেশের অগ্রণী টেক্সটাইল মিলগুলোর অন্যতম। ইস্পাহানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মির্জা সালমান ইস্পাহানির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের নিট ও ওভেন শিল্পে ব্যবহৃত সুতা উৎপাদনে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপন্ন তুলা ব্যবহারের সম্ভাব্য সুযোগের বিষয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা মানসম্পন্ন পণ্য কিভাবে বাংলাদেশের রপ্তানি অর্থনীতির জন্য সহায়ক হতে পারে, তা এই মিলের মাধ্যমে দৃশ্যমান হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক