চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে চার প্রার্থী দলীয় প্রতীক পেয়েছেন এবং একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী ‘রকেট’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে পাঁচ প্রতিদ্বন্দ্বীকে প্রতীক বরাদ্দ দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান। প্রতীক পাওয়ার পর পরই প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। ফলে এই আসনের ভোটারদের মাঝেও নির্বাচনী উত্তাপ ছড়াতে শুরু করেছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনিত মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু ‘নৌকা’, জাতীয় পার্টির মো. সামসুল আলম ‘লাঙ্গল’, তৃণমূল বিএনপির দীপক কুমার পালিত ‘সোনালী আঁশ’, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের রশিদ মিয়া ‘ছড়ি’ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনজুরুল ইসলাম ভূঁইয়া ‘রকেট’ প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। তাদের মধ্যে মনজুরুল ছাড়া বাকিরা সবাই দলীয় প্রতীক পেয়েছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ছয়জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করলেও একজন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। বাকীরা প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। এসব প্রার্থী নির্বাচনের এক দিন আগে পর্যন্ত অর্থ্যাৎ ১৭ দিন সকল ধরণের প্রচার প্রচারণা চালাতে পারবেন। তবে প্রচারণা চালাতে গিয়ে কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে প্রতীক বরাদ্দের আগেই থেকে প্রার্থীরা এতোদিন নানাভাবে কৌশলী প্রচার ও ভোটারদের সাথে সংযোগ রেখেছিলেন। প্রতীক পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় নেমেছেন প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগ প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর বাদুরতলা এলাকার জঙ্গী শাহ’র মাজার জেয়ারত ও মোনাজাতের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেন। এরপর বিকেলে শুলকবহর, মীর্জারপুল, মুরাদপুর, নাছিরাবাদসহ বেশকিছু এলাকায় ভোটারদের কাছে ভোট চাইতে যান। বিকেলে জিইসি মোড় এলাকায় নিজের নির্বাচনী কার্যালয় উদ্ধোধন করেন। এ সময় তার সাথে দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
জানতে চাইলে মহিউদ্দিন বাচ্চু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ভোটারদের কাছে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নগুলো তুলে ধরছি। সরকারের বিপুল উন্নয়নের কারণে মানুষ এখন অনেক আশাবাদী। তারা নানা দাবির কথা বলছেন। আমি নির্বাচিত হলে এসব কাজ শেষ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।’
জাতীয় পার্টির প্রার্থী সামসুল আলম প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে প্রচারণা শুরু করেছেন। তিনি আগ্রবাদের মুহুরিপাড়া এলাকায় প্রচারণা চালান। তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল। এটা গণমানুষের দল। ভোটাররা দারুণ সাড়া দিচ্ছেন। এই আসনের নির্বাচনকে আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। জয়ের ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ্বাসী।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী মনজুরুল ইসলাম জানান, নগরীর হালিশহর, মনছুরাবাদ এলাকায় তার নিজস্ব ভোট ব্যাংক আছে। জন্মলগ্ন থেকে সেখানকার বাসিন্দাদের সাথে তিনি ও তার পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। বিভিন্ন এলাকায় ভোটারদের ভালো সাড়া পাচ্ছেন তিনি। আজ তিনি আগ্রাবাদের বিভিন্ন এলাকায় ভোটারদের কাছ থেকে ভোট চেয়েছেন।
তৃণমূল বিএনপি প্রার্থী দীপক কুমার পালিত এবং মুক্তিজোট প্রার্থী রশিদ মিয়া আজ সাধারণ ভোটারদের কাছে যাননি। তারা দুইজনই দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে পোস্টার তৈরী, নির্বাচনী প্রচারণার পরিকল্পনা তৈরীতে ব্যস্ত ছিলেন। দুই প্রার্থীর মধ্যে আজ (শুক্রবার) সকালে কাট্টলী এলাকা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটারদের কাছে ভোট চাইতে যাবেন দীপক। রশিদ মিয়া সকালে হালিশহর থেকে ভোটের প্রচারণা শুরু করবেন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৮, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ২৪, ২৫ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে চট্টগ্রাম-১০ আসন গঠিত। গত ২ জুন এই আসনের এমপি ডা. আফছারুল আমীনের মৃত্যুর পর শূন্য হওয়া আসনটিতে আগামী ৩০ জুলাই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে প্রত্যেক কেন্দ্রে সিসিটিভি বসিয়ে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট নেওয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন