নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকা ধর্মঘটে শনিবার টানা দ্বিতীয় দিনের মতো দেশের বিভিন্ন নৌরুটে বন্ধ ছিল পণ্যবাহী নৌযান চলাচল। এর ফলে নদীপথে পণ্য পরিবহণে দেখা দিয়েছে অচলাবস্থা। ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরেও। লাইটার জাহাজ না চলায় বহির্নোঙরে অবস্থানরত সমুদ্রগামী মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাস করা যাচ্ছে না। তবে বন্দরের জেটিতে জাহাজে পণ্য ওঠানামা স্বাভাবিক রয়েছে।
ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ মাদার ভ্যাসেল, সাগর, নদী ও ৫৭টি ঘাটে পণ্যবোঝাই লাইটার জাহাজে আটকা পড়েছে প্রায় ১৫ লাখ টন আমদানি করা পণ্য।
বাংলাদেশ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন সেল (বিডাবিøউটিসিসি) সূত্রে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে ৫৭টি ঘাটে ৭৩৮টি লাইটার জাহাজ ১০ লাখ ১১ হাজার ২৩৫ টন আমদানি পণ্য বোঝাই করে অলস বসে আছে। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরের কুতুবদিয়াসহ বিভিন্ন অ্যাংকরেজে ২০টি মাদার ভ্যাসেলে খালাসের অপেক্ষায় আছে ৪ লাখ ৪৪ হাজার ২০০ টন পণ্য। আরও ৩৫টি জাহাজ ১ লাখ ২৫ হাজার ১৫০ টন পণ্য বোঝাই করে গন্তব্যে যেতে পারছে না। আটকে পড়া পণ্যের মধ্যে আছে বিভিন্ন ধরনের খাদ্যশস্য ও শিল্পের কাঁচামাল।
খোলা আমদানি পণ্য (বাল্ক কার্গো) নিয়ে আসা মাদার ভেসেলগুলো বহির্নোঙরে পণ্য নিয়ে অপেক্ষা করে। এসব জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করে লাইটার জাহাজে বোঝাই করা হয়। এরপর লাইটার জাহাজ সেই পণ্য দেশের বিভিন্নস্থানে পৌঁছে দেয়। প্রতিদিন অন্তত ৪০ টি লাইটার বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে পণ্য বোঝাই করে। গত দুই দিনে অন্তত ৮০ টি লাইটার বহির্নোঙরে যেতে পারেনি।
বিডাবিøউটিসিসি সূত্র জানায়, তাদের অধীনে সারা দেশে প্রায় ১ হাজার ২০০ লাইটার চলাচল করে। ধর্মঘটের কারণে এসব নৌযান বন্ধ রয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণের বাইরেও আরও কিছু লাইটার জাহাজ পণ্য পরিবহণ করে থাকে।
চাঁদপুরে মেঘনা নদীর হরিণা ঘাটের কাছে মাঝেরচর এলাকায় এমভি আল-বাখেরা জাহাজে ৭ শ্রমিককে হত্যার প্রকৃত কারণ উদঘাটন, হত্যাকারীদের সনাক্ত করে গ্রেফতার, মৃত শ্রমিকদের প্রত্যেকের পরিবারকে সরকারিভাবে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ডাকাতি বন্ধের দাবিতে লাগাতার এ ধর্মঘট শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার রাত ১২ টা ১ মিনিট থেকে।
বিডি প্রতিদিন/এএম