ফিনল্যান্ডে যথাযোগ্য মর্যাদা ও উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস তথা মে দিবস। ফিনল্যান্ডে দিনটি ‘Vappu’ নামে পরিচিত এবং এটি শুধু শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাসকেই নয়, বরং বসন্তের আগমনের আনন্দও প্রকাশ করে।
রাজধানী হেলসিঙ্কিসহ দেশের প্রধান শহরগুলোতে নানা অনুষ্ঠান ও র্যালির মাধ্যমে এই দিনটি পালিত হয়। শ্রমিক সংগঠন, রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ পতাকা, ব্যানার ও স্লোগানসহ অংশগ্রহণ করে রাস্তায় রাস্তায়। হেলসিঙ্কির সেনাট স্কয়ার, হাকানিয়েমি এবং কাম্পি এলাকায় বিশাল জনসমাগম লক্ষ্য করা গেছে।
আন্দোলনের ইতিহাসের প্রতি শ্রদ্ধা
মে দিবসের মূল উদ্দেশ্য হলো শ্রমিক শ্রেণির অধিকার, ন্যায্য মজুরি এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশের দাবি। ফিনল্যান্ডে ১৮৯০ সাল থেকে মে দিবস পালিত হয়ে আসছে। এটি ১৯৪৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে স্বীকৃতি পায়। প্রতিবছর এই দিনে মানুষ শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাসকে স্মরণ করে, যার মধ্যে আট ঘণ্টা কর্মদিবসের দাবি অন্যতম।
সমাজতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক বার্তা
বিভিন্ন বামপন্থী রাজনৈতিক দল ও ট্রেড ইউনিয়ন মে দিবসে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করে। এ বছরও অর্থনৈতিক বৈষম্য, শ্রম বাজার সংস্কার, এবং অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার সংরক্ষণ নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠে। বেশ কয়েকটি সংগঠন সরকারের নীতির সমালোচনা করে এবং ন্যায়বিচারমূলক সমাজ গঠনের আহ্বান জানায়।
Vappu: উৎসব ও ঐতিহ্যের মিলন
মে দিবস শুধু রাজনৈতিক বা শ্রমিক অধিকার দিবস নয়, বরং এটি ফিনিশ সংস্কৃতিতে এক বিশাল উৎসবের দিন। তরুণ-তরুণীরা মাথায় সাদা ছাত্র টুপি পরে রাস্তায় বের হয়, বিভিন্ন পার্কে বসে আনন্দ করে এবং ঐতিহ্যবাহী “Sima” (এক ধরনের মিষ্টি পানীয়) ও Munkki (ডোনাট জাতীয় মিষ্টি) উপভোগ করে।
এই দিন ফিনল্যান্ডের সবচেয়ে বর্ণাঢ্য সামাজিক উৎসবগুলোর মধ্যে একটি। প্রবাসী কমিউনিটিগুলোর মধ্যে বিশেষ করে বাংলাদেশি অভিবাসীরাও এই দিনটিকে উদযাপন করে নানা আয়োজনে।
মে দিবস ফিনল্যান্ডে কেবল একটি ছুটির দিন নয়, এটি হলো শ্রদ্ধা, সচেতনতা, ঐতিহ্য এবং আনন্দের সম্মিলন। শ্রমিকদের অধিকারের প্রতি সম্মান জানানোর পাশাপাশি, এই দিনটি ফিনিশ সমাজে সাম্যের বার্তা পৌঁছে দেয়।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ