স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, উপজেলা, ইউনিয়ন, পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন এক সঙ্গে করার প্রস্তাব করা হবে।
গতকাল রবিবার দুপুরে নগরের একটি রেস্টুরেন্টে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের দেশের নির্বাচন খুবই ব্যয়বহুল। ব্যয়বহুল দুই সেন্সে-একটা প্রার্থীর জন্য অন্যটা সরকারের। আমি নির্বাচন কমিশন থেকে তথ্য নিয়ে দেখেছি, গত সরকারের সময়ে যে নির্বাচনগুলো হয়েছে এতে খরচ হয়েছে ২৩ হাজার কোটি টাকা। ১৯ লাখ লোককে নিয়োগ করা হয়েছে। সময় লেগেছে ২২৫ দিন। তাহলে এই জিনিসটা অনেক ব্যয়বহুল, অনেক সময় নষ্ট করে এবং অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার ফলে কাজকর্ম ব্যাহত হয়।
তিনি বলেন, একটা কমন কথা আসবে, ভোট কেনাবেচা হবে। ভোটের মধ্যে টাকা খরচটাও শুধু সংসদীয় পদ্ধতিতে হচ্ছে তা নয়। একজন মেয়র হতে হলে ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে খরচ করতে হচ্ছে। এই খরচের বহরটা কিন্তু কমাতে হবে নির্বাচন থেকে। না হলে ভালো মানুষ আসতে পারবে না নির্বাচনে। সেজন্য একদিনে নির্বাচন করার আইন পরিবর্তন করা হলে খরচ হবে ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকা। সময় লাগবে ৪০ থেকে ৪৫ দিন। একবারেই নির্বাচন শেষ হয়ে যাবে। একেকটা নির্বাচন একেক সময়ে হলে সরকারের সময়, বাজেট এবং পরিকল্পনার সাথে সম্পর্ক থাকছে না।
তিনি বলেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন এটা কেউ চাচ্ছে না। কিন্তু দলের একেবারে প্রভাবমুক্ত হবে এটা কিন্তু হলফ করে কেউ বলতে পারবে না। যারা নির্বাচন করে তারাই তো রাজনীতি করেন। একদল থেকে হয়তোবা একাধিক প্রার্থী দাঁড়াবে। যদি আমরা এটা করতে পারি- সরকারি চাকরি বা অন্য কিছু করার পরেও কাউন্সিলর-মেম্বার হতে বাধা নেই, তাহলে কোয়ালিটি চেঞ্জ হতে পারে। ইঞ্জিনিয়ার, প্ল্যানার- এরকম অনেকে আছেন। তারা যদি দাঁড়ান, তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন, তাহলে নির্বাচনের কোয়ালিটি ভালো হবে।
ড. তোফায়েল বলেন, সংসদীয় পদ্ধতি এবং রাষ্ট্রপতি পদ্ধতি- এই দোলাচলের মধ্যে অনেকরকম মতামত পাচ্ছি। বিশেষ করে যখন মেম্বার, কাউন্সিলর, সাধারণ লোক এবং একাডেমিয়ান- তারা বেশিরভাগই সংসদীয় পদ্ধতির পক্ষে। চেয়ারম্যান এবং মেয়র সাহেবরা এটার বিরোধীতা করছেন। তারা বলছেন, এটা করলে যারা এতদিন চেয়ারম্যানে ছিলেন কিংবা মেয়রে ছিলেন তারা মেম্বারে দাঁড়াবেন কিভাবে? এর মানে মেম্বারশিপটাকে নেগলেট করা হচ্ছে চারদিক থেকে। মেম্বারের যদি কোয়ালিটি ইমপ্রুভ করতে হয় তাহলে মেম্বার কারা হবে তাতেও অনেকরকম পরিবর্তন করতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. ফেরদৌস আরফিনা ওসমান, আবদুর রহমান, ড. মাহফুজ কবীর, মাশহুদা খাতুন শেফালী, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম, ইলিয়া দেওয়ান, অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন