২০১১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী হিমেল দাশ সুপনকে (১৬) অপহরণের পর হত্যা মামলার রায়ে ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ে আদালত একই আসামিদের যাবজ্জীবন ও জরিমানা দণ্ড দিয়েছেন। আজ বুধবার চট্টগ্রামের দ্বিতীয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সেলিম মিয়া এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন হিমেলের দূর সম্পর্কের চাচা সুনীল দাশ, মাহমুদুল ইসলাম ও তার ভাই নজরুল ইসলাম প্রকাশ লাল মিয়া, মিজানুর রহমান চৌধুরী, মো. হোসেন প্রকাশ সাগর এবং মো. সেলিম। এর মধ্যে চারজন কারাগারে এবং অপর দুজন পলাতক রয়েছেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-২ এর পিপি অ্যাডভোকেট এম এ নাসের বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় আদালত ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও দিয়েছেন আদালত।
আদালত সূত্র জানা গেছে, ২০১১ সালের ৮ মে এসএসসি পরীক্ষার ফল ঘোষণার চারদিন আগে নিখোঁজ হয় চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র হিমেল দাশ সুপন। পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে মাহমুদুল ইসলাম ও তার ছোট ভাই নজরুল ইসলামের সঙ্গে বান্দরবানে বেড়াতে গিয়ে অপহূত হন হিমেল। ১৩ মে হিমেলের মা পাপিয়া সেন বাদি হয়ে ডবলমুরিং থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন পরবর্তীতে যা মামলায় রূপান্তর হয়। ১৪ মে বান্দরবানের দুর্গম নাগাঝিরি পাহাড় থেকে নগরীর ডবলমুরিং থানা পুলিশ হিমেলের লাশ উদ্ধার করে।
ওই মামলায় গ্রেফতার হওয়া দুই আসামি মাহমুদুল ইসলাম ও তার বড় ভাই নজরুল ইসলাম আদালতে জবানবন্দি দিয়ে জানান, হিমেলের চাচা সুনীল দাশের পরিকল্পনায় তাকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে। সম্পত্তির লোভে সুনীল দাশ এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন। ২০১১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ছয়জনকে আসামি করে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। অভিযোগ গঠন ও সাক্ষ্যগ্রহণের পর আদালত এ রায় দিয়েছেন।
অপহরণের চারদিন পর ১২ মে প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেছিল হিমেল। কিন্তু নিজের কৃতিত্বময় ফলাফলের কথা জেনে যেতে পারেনি হিমেল। মর্মান্তিক এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা চট্টগ্রামে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল।
বিডি-প্রতিদিন/৯ মার্চ ২০১৬/শরীফ