কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার থোল্লা এলাকায় বজ্রপাতে দুই শ্রমিক নিহত এবং ১৭ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকালের এই ঘটনায় মারাত্মক আহত ৬ জনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং একজনকে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকীদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে।
নিহত শ্রমিকরা হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলার মজলেছপুর গ্রামের বাছির মিয়ার ছেলে আল আমিন(৩০) ও দিলু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আলী।
বৃহস্পতিবার সকালে শ্রমিকরা ছুটিতে যাওয়ার কথা ছিল। শ্রমিকদের মজুরী পরিশোধে বিলম্ব হওয়ার কারণে তারা সকালে বাড়িতে যেতে পারেননি বলে শ্রমিকরা জানিয়েছেন।
শ্রমিক সর্দার হাবিব মিয়া (৫২) জানান, বর্ষাকাল এসে পড়ায় অন্যান্য ব্রিকস্ ফিল্ডের ন্যায় আমরাও ছুটি পাই। বৃহস্পতিবার সকালে আমরা চলে যাওয়ার কথা থাকলেও মালিক আমাদের পাওনা টাকা দিতে বিলম্ব হওয়ায় অপেক্ষা করতে থাকি। বেলা আড়াইটার সময় প্রচণ্ড বর্ষণ শুরু হয়, এসময় আমরা এক এলাকার ২৪ জন শ্রমিকের মধ্যে ১৯ জন ব্রিকস ফিল্ডের একটি ছাপড়া ঘরে অবস্থান করছিলাম। বাকীরা চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিল। হঠাৎ প্রচণ্ড বাতাসে ঘরের চালা উড়িয়ে নেয়ার অবস্থা দেখে আমরা রশি দিয়ে চালা আটকে রাখার চেষ্টা করি। এসময় হঠাৎ একটি শব্দে সবাই স্তব্ধ হয়ে যাই। তন্দ্রা কেটে আসলে আর্তনাদ শুনতে পাই।
নিহত আল আমিনের ভাই লিংকন (২০) দেবিদ্বার হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তার ভাইয়ের মরদেহ জড়িয়ে ধরে আর্তনাদ করতে দেখা যায়। আমি বাড়ি গিয়ে কি জবাব দেব। আমার ভাইজি টুম্পা ফোনে তার বাবাকে বলছিল, ছুটিতে বাড়ি আসার সময় তার জন্য পহেলা বৈশাখের নতুন জামা কিনে নিতে। এখন আমি ভাইজিকে কি জবাব দেব? আমার ভাই ছুটিতে বাড়ি যাবেন, জীবনের ছুটি নিয়ে চলে যাবে ভাবতে পারিনি। তার আহজারিতে উপস্থিত সকলের চোখ ভিজে উঠে।
বিডি-প্রতিদিন/৩১ মার্চ, ২০১৬/মাহবুব