জাতীয় বক্তব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. একেএম মোস্তফা বলেছেন, দূষিত পানি ব্যবহারের কারণে ডায়রিয়া থেকে শুরু করে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। সম্প্রতি ডায়াবেটিক ও কিডনি রোগী বৃদ্ধির পেছনেও দূষিত পানির বড় অবদান আছে।
ইডব্লিউএমজিএল'র কনফারেন্স রুমে বাংলাদেশ প্রতিদিন আয়োজিত 'নিরাপদ পানি: সমস্যা ও করণীয়' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজামের স্বাগত বক্তৃতার মধ্যে দিয়ে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। নঈম নিজাম বলেন, ছোটবেলা থেকে পড়ে এসেছি 'পানির অপর নাম জীবন'। কিন্তু এখন পানিকে কতটা জীবন বলা যায়? কতটুকু নিরাপদ পানি আমরা পান করছি? নগরে যে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে তা কতটুকু নিরাপদ? পানির জারে শ্যাওলা পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে ভাবা জরুরি হয়ে পড়েছে। জনসম্পৃক্ত বিষয় নিয়ে এর আগেও বাংলাদেশ প্রতিদিন গোলটেবিলের আয়োজন করেছে। মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত সকল বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করে যাব।
গোলটেবিল বৈঠকটির মিডিয়া পার্টনার হিসেবে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে বসুন্ধরা গ্রুপের সংবাদভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল নিউজ২৪। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন নিউজ২৪ এর চিফ রিপোর্টার নাজনীন মুন্নী।
ডা. মোস্তফা বলেন, অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন ডায়াবেটিকের সঙ্গে পানির কী সম্পর্ক। কিন্তু দূষিত পানিতে এমন কিছু কেমিকেল আছে যা মানুষের প্যানক্রিয়াসের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ফলে ইনসুলিনের স্বাভাবিক নিঃসরণ বন্ধ হয়ে মানুষ ডায়াবেটিকে আক্রান্ত হয়। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন দূষিত পানি ব্যবহারের কারণে শরীরে টক্সিন (বিষাক্ত পদার্থ) জমা হয় যা বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ইদানিং কিডনি ডিজিস এবং ক্রনিক লিভার ডিজিস বেড়ে গেছে। চক্ষু রোগী বাড়ছে। ওরাল ক্যান্সার বাড়ছে। এই প্রত্যেকটি রোগের সঙ্গে দূষিত পানির যোগসূত্র রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দূষিত পানির কারণে কেমিকেল পয়জনিং হয়ে মানুষ মারাও যেতে পারে। বাংলাদেশের সাবেক এক রাষ্ট্রপতি কেমিকেল পয়জনিংয়ে মারা গেছেন। এছাড়া দূষিত পানি ব্যবহারের কারণে হেপাটাইটিস, টাইফয়েড, আমাশয়, গ্যাস্ট্রিক আলসার, ত্বকের নানা রোগ এমনকি ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।
গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক সচিব ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরোর সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ মুসা, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব শ্যামল কান্তি ঘোষ, আইসিডিডিআরবি'র জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ড. মনিরুল আলম, এলজিআরডি'র সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. শহীদুল হাসান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বিশ্বব্যাংক প্রকল্পের পরিচালক এ কে এম ইব্রাহিম, প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সাউথ এশিয়া ওয়াশ রেজাল প্রোগ্রামের হেড অব কান্ট্রি কোঅর্ডিনেশন ইউনিট পার্থ হেফাজ সেখ, ওয়াসার সাবেক এমডি ও পানি বিশেষজ্ঞ ড. আজহারুল হক, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব ওমর ফারুক, স্যানিটেশন ও পানি বিশেষজ্ঞ আব্দুল হাকিম, র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার আলম, সাইটসেভার্স'র অ্যাডভোকেসি এন্ড কমিউনিকেশন বিভাগের কোঅর্ডিনেটর আলিম বারী, ব্যারিস্টার আহসান হাবিব প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/০৯ এপ্রিল ২০১৬/ এস আহমেদ