নিখোঁজ জঙ্গি জুন্নুন শিকদারের ব্যাংক হিসাবে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। পাকিস্তান ও ইয়েমেন ফেরত জঙ্গিদের সঙ্গে এই টাকা বিনিময় হয়েছে এমন তথ্যও পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বেসরকারি ব্যাংকের হিসাব থেকে এই টাকা লেনদেন হয়। এ সংক্রান্ত সব তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথের সাবেক শিক্ষার্থী জুন্নুন শিকদার (পাসপোর্ট নম্বর-বি ই ০৯৪৯১৭২)। তরুণদের দাওয়াতি কার্যক্রমের মাধ্যমে উগ্রপন্থী দলে টানাই তার প্রধান কাজ। পরিবারের পক্ষ থেকে র্যাব ও পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থাকে জানানো হয়েছে জুন্নুন নিখোঁজ। তবে সে যে জঙ্গিদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে এ তথ্য দেয়া হয়নি।
জুন্নুনের ব্যাংক হিসাব থেকে তালিকাভুক্ত ভয়ংকর জঙ্গিদের ব্যাংক হিসাবে টাকা পাঠানোর তথ্য পাওয়া যায়। অর্থপ্রদানকারী জুন্নুন শিকদার নিজেকে একজন ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিলেও কী ধরনের ব্যবসা ছিল সে বিষয়ে ব্যাংকের কাগজপত্রে উল্লেখ নেই। সেখানে তার ঠিকানা দেয়া হয়েছে রাজধানীর হাজারীবাগের মনেশ্বর রোডের। জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ২৬৯১৬৪৮০৮৫৫০৫। বেসরকারি ওই ব্যাংক হিসাবের (১০১১০১১৪০৩৯১) তথ্যে আরও দেখা যায়, জুন্নুনের জন্ম ১৯৮৭ সালের পহেলা জুন।
এদিকে, ব্লগার রাজীব হায়দার হত্যাকাণ্ডের পর গ্রেফতার করা হয়েছিল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফয়সাল বিন নাঈম দীপ, এহসান রেজা রুম্মান, মাকসুদুল হাসান অনিক, নাঈম ইরাদ ও নাফিজ ইমতিয়াজ ও সাদমান ইয়াছির মাহমুদকে। তাদের কাছ থেকেও জুন্নুনের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। এবিটিতে নতুন নতুন লোক রিক্রুট ও দাওয়াতি কার্যক্রমে জড়িত ছিল এই জুন্নুন। আর এবিটির তৎকালীন প্রধান কারাবন্দি মুফতি জসিম উদ্দিন রাহমানীর হাত ধরেই সে এ পথে আসে।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ২০১৩ সালের দিকে জুন্নুন শিকদার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল। পরে সে দাওয়াতি কার্যক্রম প্রচারের উদ্দেশ্যে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগে ভর্তি হয়। তখন জেএমবির রেজওয়ান শরীফ এবিটির প্রধান জসিম উদ্দিন রাহমানীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হওয়ায় এরা একসঙ্গে কাজ করে। আর জুন্নুনের দলের নাঈম আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের কম্পিউটার সংক্রান্ত টেকনিক্যাল দিক দেখত। সাইফুল, জাহিদ ও আলী আজাদ মুফতি জসিম উদ্দিনের বক্তব্য এবং ছবি আপলোডসহ দেশ-বিদেশে তথ্য আদান প্রদানে জড়িত ছিল। চক্রের জঙ্গিদের অর্থ আদান প্রদানের মাধ্যম হিসেবে কাজ করত জুন্নুন। বর্তমানে গোয়েন্দারা তার ব্যাংক হিসাবের পাশাপাশি পুরো নেটওয়ার্ক কব্জায় নেয়ার চেষ্টা করছে। সে লক্ষ্যে কাজ চলছে বলে সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করেছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ২০ জুলাই, ২০১৬/ আফরোজ