কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের ১৫ মাস পূর্তি হলো মঙ্গলবার। এত দিনেও তনুর খুনি শনাক্ত না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছে তার পরিবার।
তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, সামনে ঈদ, তনু ছাড়া ঈদ করবো ভাবতেই বুকটা ভেঙে যায়। তনুকে ছাড়া আমাদেরকে আরেকটি কষ্টের ঈদ পালন করতে হবে। ঈদের কেনাকাটায়, ঘর গোছানো, বিভিন্ন মজার খাবার রান্নায় তনু নেতৃত্ব দিতো। তনু ঈদে নতুন জামার জন্য আর বায়না ধরবে না, বাপ-ভাইয়ের জামা কেনায় নিজের মত দিবে না। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ১৫ মাসেও তনু হত্যায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে পারেনি মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। সিআইডি আগে খবর নিলেও এখন আর খবরও নেয় না।
গত বছরের ২০ মার্চ রাতে একটি জঙ্গল থেকে কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরদিন তার বাবা ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতয়ালী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
থানা পুলিশ ও ডিবির পর গত বছরের ১ এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় কুমিল্লা সিআইডি। তনুর দুই দফা ময়নাতদন্তে কমিল্লা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক বিভাগ মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ না করে প্রতিবেদন দেয়ায় ঘটনার রহস্য উৎঘাটন নিয়ে শুরু থেকেই সংশয় দেখা দেয়। ভরসা ছিল ডিএনএ রিপোর্ট।
গত বছরের মে মাসে সিআইডি তনুর জামা-কাপড় থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে ৩ জনের শুক্রানু পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল। পরে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ ম্যাচিং করার কথা থাকলেও তা করা হয়েছে কিনা কিংবা ফলাফল কি? এ নিয়েও সিআইডি মুখ খুলছে না।
গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লার মুখপাত্র খায়রুল আনাম রায়হান বলেন, দীর্ঘ ১৫ মাসেও তনু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত বা গ্রেফতার করতে না পারা, ডিএনএ পরীক্ষায় ৩ জনের শুক্রানু পেলেও এ পর্যন্ত ডিএনএ ম্যাচ করে ঘাতকদের শনাক্ত করতে না পারায় তনুর পরিবারসহ সচেতন মহলে বিচার নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। সিআইডি মামলাটি দিন দিন হিমাঘারের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তনুর হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি-কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দীন আহমেদ জানান, মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম থেমে নেই। মামলার বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে, কিছু অগ্রগতিও আছে। তাই এ বিষয়ে এর চেয়ে বেশী মন্তব্য করা যাচ্ছে না।
বিডি-প্রতিদিন/২০ জুন, ২০১৭/মাহবুব