রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রামের বস্তিসহ বিভিন্ন স্পটে রেলের অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। এ সংযোগের নেপথ্যে রয়েছেন রেলের বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বশীলরা। অবৈধ সংযোগকারিদের কাজ থেকে মাসোহারা নিয়ে রেলের দায়িত্বশীলরা একই পদে দীর্ঘ বছর ধরেই কাজ করছেন টেন্ডার জালিয়াতসহ নানাবিধ অপকর্মের মাধ্যমে। কোন ধরণের অভিযোগ উঠলেই মন্ত্রী-ডিজির নাম ভাঙ্গিয়ে আশেপাশের কিছু চিহ্নিত লোক অবৈধ সুবিধাভোগের মাধ্যমে রেলের অভিযুক্ত দায়িত্বশীল কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বাচাঁনাের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। এতে আরো বেপরোয়া হয়ে নানাবিধ কর্মকান্ড করে আসছেন বলে জানান একাধিক রেল কর্মকর্তা-কর্মচারিরা।
জানা যায়, গত রবিবার গভীর রাতে সিআরবি এলাকায় রেলের অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের দ্বন্দ্বের কারণেই খুন হয়েছে গাড়ি চালক মনির হোসেন (৪৪)। এ ঘটনায় জড়িত মো. শফিক (৪২) নামে একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও এলাকার পরিস্থিতি এখনও থমথমে আছে বলে স্থানীয়রা জানান। এ ঘটনায় সোমবার শফিককে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন বলে জানান কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো জসিম উদ্দিন। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মনির এবং শফিক দুজনই সিআরবিতে রেলওয়ের জায়গা দখল করে ঘর বানিয়ে বসবাস করেন। সেখানে অবৈধ বস্তিগুলোতে আলাদাভাবে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দেন মনির ও শফিক। এতে ভাগাভাগি নিয়ে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণেই মনির খুন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রেল কর্মচারী লক্ষ্মীপুর জেলার শামসুল হকের ছেলে মনির পরিবার নিয়ে প্রায় ৪০ বছর ধরেই সিআরবি এলাকায় বসবাস করে আসছে। লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে মূল ঘাতক শফিককে গ্রেপ্তার করা হলেও ঘটনাস্থলসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশ নিয়মিত টহল দিচ্ছে এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক রেল স্টাফ ও স্থানীয় লোকজন বলেন, রেলের বিদ্যুৎ বিভাগের কিছু চিহ্নিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারণে এসব অবৈধ সংযোগগুলো বিচ্ছিন্ন করা যাচ্ছে না। তাদের (রেল কর্মকর্তা) মাসোহারার মাধ্যমে বাইরে বিদ্যুৎ পাচার করে অবৈধ সংযোগ দেয়া হচ্ছে। এতে খুন থেকে শুরু করে নানাবিধ অপকর্মও চলছে। অবৈধ সুবিধা বন্ধের ভয়ে কোন ধরণের উচ্ছেদ চিঠিও তেমন দেয়া হয় না। কোন রকমে দায়সারা ঘোসের চাকরি করলেও মাসে লাখ লাখ টাকা অবৈধ সাবলেটে বাসা, অফিসের স্টাফদের ঘরের মধ্যে চাকরি করাসহ নানাবিধ অপকর্ম করেই চলছে। রেল শ্রমিক নেতারাও নিজেদের স্বার্থে আঘাত আসলেই প্রতিরোধ-প্রতিবাদ করে। এসব বিষয়গুলো প্রতিরোধের বা আইনগত ব্যবস্থা না নিলে দিন দিন আরো বৃদ্ধি পাবে বলে জানান তারা। সূত্রে জানা যায়, পূর্বাঞ্চল রেলের সদর দফতর ঘিরে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আছে জামতলা বস্তি, বয়লার কলোনিসহ একাধিক অবৈধ বসতি। তাছাড়া চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের দক্ষিণ পার্শ্বে রেলের জায়গা অবৈধ মাকের্ট করে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। এতে রেলের কর্মচারিরা জড়িত থাকলেও কেউ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার