
শিরোনাম
- ৫ অতিরিক্ত ডিআইজিসহ পুলিশের ১৬ কর্মকর্তাকে বদলি
- ফরিদা পারভীনকে দেখতে হাসপাতালে মির্জা ফখরুল
- চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিদর্শন করলেন নৌবাহিনী প্রধান
- বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ
- উন্নয়নের নামে প্রতারণা করে ক্ষমতায় ছিল স্বৈরাচারী সরকার : রিজভী
- হাসিনার কল রেকর্ড ফাঁস : ‘এটা ট্রেলার মাত্র, অনেক কিছু এখনো বাকি’
- নাটোরে সেনা অভিযানে কিশোর গ্যাংয়ের ১২ সদস্য গ্রেপ্তার
- ভিডিও ছড়ানোর ‘মূলহোতা’ শাহ পরান পাঁচদিনের রিমান্ডে
- র্যাগিংয়ের নামে জুনিয়রদের যৌন হেনস্তার অভিযোগে ৭ ইসরায়েলি সেনা আটক
- চট্টগ্রামে টানা বর্ষণে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা
- জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে লক্ষ্মীপুরে ১৫ দিনের কর্মসূচি
- স্পেনের আদালতে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরু
- জুলাই বিরোধী শিক্ষকদের পদোন্নতির প্রতিবাদে গোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি
- সিরাজগঞ্জে ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন
- টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে আবারও শীর্ষে হ্যারি ব্রুক
- সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য জরুরি নির্দেশনা মাউশির
- ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে জাকেরের বড় লাফ, শান্ত-লিটনের অবনমন
- খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের অস্থায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ শেফালিকা ত্রিপুরার
- ট্রাম্প টাওয়ারে অফিস খুলছে ফিফা
- ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম ও নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু
রাস্তায় ভাসছে কাদেরের হৃদয়ের ভাষা
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
অনলাইন ভার্সন
_.jpg)
কত কঠিন কাদেরের জীবন? পুরোপুরি জানা যায়নি। কেবল ধারনা পাওয়া গেছে। তাতেই বোঝা গেছে, বড় কঠিন তার জীবন। কাদেরের পুরো নাম জানা যায়নি। জানা যায়নি, পুরো ঠিকানাও। কারণ, কথা বলার মতো মানসিকতা কাদেরের সব সময় থাকে না। যখন তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল, তখনও তার কথা বলার ইচ্ছে ছিল না।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে যাওয়ার সরু রাস্তাটি গাছ পড়ে বন্ধ। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সেই বন্ধ রাস্তার ওপর আলপনা আঁকতে দেখা গেল কাদেরকে। রঙ বা তুলি দিয়ে নয়। চক, ইট আর কয়লার টুকরো দিয়েই আলপনা আঁকছিলেন তিনি। আলপনায় লেখা কিছু কথা, যা কিছুক্ষণের জন্য হলেও মানুষকে ভাবিয়ে তুলবে নিশ্চিত। যেন রাস্তায় ভাসছে কাদেরের হৃদয়ের ভাষা!
টানা টানা শব্দে কাদের লিখেছেন- ‘এমন জীবন তুমি করিও গঠন, মরিলে হাসিবে তুমি, কাঁদিবে ভূবন’। ‘মানুষ কি মানুষ, শুধু ক্ষণিকের যাত্রী’। ‘অগাদ সয়-সম্পত্তির চেয়েও একজন সু-শিক্ষিত সন্তানের মূল্য অনেক বেশি’। ‘শত ব্যথার মাঝেও যে হাসি, সে হাসি অনেক দামি।’ এমন আরও অনেক কথা।

কাছে গিয়ে কথা বলতে চাইলে চুপচাপ কাদের। কথা বলতে পারেন কি না, জানতে চাইলে নিজের মাথাটা একবার ওপর-নিচ করে কাদের জানান দেন, তিনি কথা বলতে পারেন। তাহলে চুপচাপ কেন, জানতে চাইলে কাদের আঙ্গুল তুলে আলপনার দিকে ইশারা করলেন। সেখানে লেখা- ‘কথা বলার মতো মন-মানসিকতা সব সময় থাকে না।’
বোঝা গেল, কাদের কথা বলতে চান না। কিন্তু নামটা তো জানা দরকার। প্রশ্ন করলে কাদের আবার ইশারা করলেন আলপনার দিকে। সেখানে লেখা- ‘কাদের, ১৯৯০ সালে ইন্টার’। বাড়ি কোথায়, জানতে চাইলে এবারও আলপনার দিকে আঙ্গুল কাদেরের। সেখানে লেখা- ‘বাড়ি ছিল দক্ষিণবঙ্গে। বিশাল এক নদীর কূলে। জেলা বরিশাল।’
বরিশাল থেকে রাজশাহী কেন, এমন প্রশ্নে কিছুটা বিরক্তের ছাপ লক্ষ্য করা গেল কাদেরের চোখে-মুখে। তারপরেও আঙ্গুল তুললেন আলপনার দিকে। দেখা গেল, সেখানে কাদের লিখেছেন- ‘ছন্নছাড়া মন ঠিক হয়ে আর কোথাও দাঁড়ায় না। যেখানেই যাই, মানুষে বলে পাগল।’ এর পাশে তিনি লিখেছেন- ‘পথ চলতে হোটেলে ভাত-রুটি খাবার জন্য যদি কারও মন চায় কিছু হেল্প মি (সাহায্য করুন)। খুব ক্ষুধার্ত।’
প্রায় ৫০ বছর বয়সী কাদেরের মাথায় বাবরি চুল। গায়ের রঙ কালো। পরনে ময়লা লুঙ্গি আর গেঞ্জি। মাথায় গামছা। পায়ের স্যান্ডেল খুলে তার ওপর বসে আছেন কাদের। পাশে তার ছোট একটা বস্তা। তাতে প্রয়োজনীয় কিছু আছে হয়তো। বাইরে থেকে একটা পানির বোতল দেখা গেল।
কিছুক্ষণ পর ওই পথ ধরে এলেন রাজশাহী নার্সিং কলেজের দুই ছাত্রী। এমন আলপনা দেখে তারা মুগ্ধ। তারা মুঠোফোনে আলপনার ছবি তুললেন। কাদেরের লেখাগুলোও পড়লেন। তারপর কাদেরের হাতে দিলেন ক’টা টাকা।
কাদের চলে গেলেন। যাওয়ার আগে আলপনার একটা অংশে ইংরেজিতে বড় বড় করে লিখে গেলেন- ‘ডু নট উইপ (মুছবেন না)’। কিন্তু একটু পরই নামল বৃষ্টি। মুছে গেল কাদেরের মুগ্ধতা ছড়ানো আলপনা। মুছে গেল তার হৃদয়ের ভাষা!
বিডি প্রতিদিন/১১ জুলাই, ২০১৭/ফারজানা
এই বিভাগের আরও খবর