চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ত্রিপুরা পল্লীতে অজ্ঞাত রোগে গত এক সপ্তাহে ৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ আজ বুধবার একদিনেই চার শিশুর মৃত্যু হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার প্রথম এক শিশু মারা যায়। তবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগ এটিকে ভাইরাস জনিত জ্বর বলে আখ্যা দেয়। এ রোগের নাম এখনো জানা যায় নি। তাই সংক্রামক ব্যাধি হওয়ায় ওই এলাকার আরো ৪০জন শিশুকে নগরের ফৌজদারহাট বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতাল এবং চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাছাড়া আজ দুপুরে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, ‘এই শিশুদের প্রথমে জ্বরের সঙ্গে শরীরে বিচি ওঠে।এরপর কাশি ও শ্বাসকষ্ট হয়ে তারা মারা যায়। খবর পেয়ে আজ ঘটনাস্থলে যাই। এখান থেকে আরো ৪০ শিশুকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এটাকে আমরা অজ্ঞাত রোগ বলছি। এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ দল আসবে। তারা সিদ্ধান্ত দেবেন। ’
বিআইটিআইডি এর পরিচালক ডা. এম এ হাছান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা আক্রান্ত শিশুগুলোর রোগ বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করছি। এখন প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
চমেক হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘চমেক হাসপাতালে ১১ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে জরুরি ভিত্তিকে একজনকে শিশু আইসিইউতে ও বাকিদের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগে ভর্তি করা হয়। তিনি বলেন, তারা এক ধরণের ভাইরাস জরে আক্রান্ত। জ্বর আসার পর তারা কোনো চিকিৎসা না নিয়ে স্থানীয়ভাবে হোমিওপ্যাথিক খায়। ফলে জ্বরটি মারাত্মক আকারে ধারণ করে। ’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ত্রিপুরা পল্লীর সবাই অত্যন্ত দরিদ্র। অনেক বড় একটি পাহাড়ে ত্রিপুরা পল্লীর অবস্থান। উন্নয়ন ও নাগরিকসেবার কোনো আলো সেখানে নেই। পাহাড়ে মাটির তৈরি বাড়িতেই তাদের বসবাস। অনেকটা উপজাতিদের মতই জীবনযাপন। মাটির বেড়া আর টিনের ছাদ। তারা তাদের মতই করে জীবনধারণ করে। তাদের জীবিকা পাহাড়কেন্দ্রিক। সেখান থেকে পাহাড়ি বাংলা কলা, মৌসুমি নানা ফলমূল ও জ্বালানি বৃক্ষ সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করে তারা জীবিকা নির্বাহ করে। পাহাড়ে কয়েকটা দোকান থাকলেও তেমন সমৃদ্ধ নয়।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার