রাজধানীর দারুস সালাম থানার বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় পাইলট সাব্বির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ ঢাকা মহানগর হাকিম মো. সারাফুজ্জামান আনছারী আসামির এ জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
আদালত সূত্র জানায়, আসামি সাব্বির স্বীকারোক্তিমূলক জাবানবন্দিতে বলেছেন, রাজধানীর মিরপুর মাজার রোডে গত ৪ সেপ্টেম্বর ‘কমল প্রভা’ নামের বাড়িতে নিহত জঙ্গি আবদুল্লাহর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল। নিহত জঙ্গি আব্দুলাহ তাকে বিভিন্ন ভাবে দলে ভেরানোর চেষ্টা করেছিল। এছাড়া উড়োজাহাজ নিয়ে জঙ্গি হামলার জন্য বিভিন্ন লোভনীয় প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু জঙ্গিদের সেই প্রস্তাব পাইলট সাব্বির পত্যাখান করেছেন। এছাড়া মামলার ঘটনার বিষয়ে আরো বিস্তারিত ভাবে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে পাইলট সাব্বির।
এরআগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামি সাব্বিরকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। এর আগে ১ নভেম্বর পাইলট সাব্বিরকে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেন আদালত। পরে রিমান্ডে থাকাকালিন সময়ে সাব্বির ঘটনার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জাবানবন্দি দিতে ইচ্ছা পোষণ করেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, আসামি সাব্বির ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমি থেকে উড়োজাহাজ চালানোর প্রশিক্ষণ নেন। ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত রিজেন্ট এয়ারওয়েজে চাকরি করেন। ওই বছরই তিনি বিমানের পাইলটের চাকরি নেন। বিমানের ফার্স্ট অফিসার হিসেবে সাব্বির বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ চালাতেন। গত ৩০ অক্টোবর তিনি ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করেন। তবে জঙ্গি আবদুল্লাহর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল। এরই অংশ হিসেবে সাব্বির বিমান চালিয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের বাসভবনে আঘাতের পরিকল্পনা করেন বলে জানায় র্যাব। এছাড়া গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে মিরপুর মাজার রোডের বর্ধনবাড়ি এলাকায় ‘কমল প্রভা’ নামের একটি বাড়িতে (পাইলট সাব্বির ও সুলমানা পারভীনের বাড়ি) অভিযান চালায় র্যাব। অভিযান চলার সময় ওই বাড়ির পঞ্চম তলায় ‘জঙ্গি আস্তানায়’ ভয়াবহ রাসায়নিক বিস্ফোরণ হয়। অভিযানে জঙ্গি মীর আকরামুল করিম ওরফে উপল ওরফে আবদুল্লাহ ও তার পরিবার আত্মসমর্পণের জন্য সময় নেয়। কিন্তু পরে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আবদুল্লাহ, তার দুই স্ত্রী নাসনির ও ফাতেমা, দুই সন্তান ওসামা বিন আকরামুল ও ওমর বিন আকরামুল এবং দুই সহযোগী কামাল ও অজ্ঞাত ব্যক্তি আত্মাহুতি দেয়।
ওই ঘটনায় র্যাব বোমা, গান পাউডারসহ ২৪ ধরনের আলামত জব্দ করে। এরপর গত ৮ সেপেম্বর বিস্ফোরক আইনে রাজধানীর দারুস সালাম থানায় মামলা করে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার