রেলওয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের ট্রেন লাইনটিং ও এসি অপারেটর কর্মচারিদের টিএ বিল (যাতায়াত ভাতা) বিতরণে অনিয়মের ঘটনায় পূর্বাঞ্চলের প্রধান বিদ্যুৎ কর্মকর্তা (সিইই) আনোয়ার হোসেনকে দ্রুত তদন্তপূর্বক মতামতসহ জরুরী প্রতিবেদন দেয়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন। সোমবার পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারি মহাব্যবস্থাপক (এডি. জিএম) ইশা-ই-খলিল এ নির্দেশ দেন। এ ঘটনার পরে ইতিমধ্যে টিএ (যাতায়াত ভাতা) বিল বিতরণের অনিয়মের বিষয়ে ‘সমঝোতা’র মাধ্যমে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাকে কিছু টাকা ফেরত দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর আগে গত ২১ নভেম্বর বাংলাদেশ প্রতিদিনের অনলাইন ভার্সনে 'রেল কর্মচারিদের যাতায়াত ভাতা বিতরণে অনিয়ম, হাতাহাতি' শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হয়।
তবে এ বিষয়ে জানতে এসএসএই (টিএল) শাহ আলমকে ফোন করা হলে তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না বলে জানান এবং উধর্তন কর্মকর্তার (ডিইই-চট্টগ্রাম) সাথে কথা বলার পরার্মশ দেন। ঘটনার দিন কর্মচারি মনছুর মিয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বিল প্রদানের জন্য কিছু পার্সেন্টিস (কম/বেশী) নিয়ে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল এমন কথা বললেও আজ ফোনে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তবে এ ঘটনার যথাযথ তথ্য প্রমাণ সংরক্ষিত রয়েছে।
রেলওয়ে ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে রেলওয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের ট্রেন লাইনটিং ও এসি অপারেটর কর্মচারিদের টিএ বিল (যাতায়াত ভাতা) বিতরণে অনিয়মের ঘটনায় কর্মচারিদের মধ্যে উত্তেজনা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ বিভাগের চিহ্নিত একটি চক্র তৈরি করা বিলের ডুপ্লিকেট কপির মাধ্যমে প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকার কমিশন (পার্সেন্টস) হাতিয়ে নিচ্ছে কয়েকজন কর্মচারি।
বিল পাস করার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে কিছু পার্সেন্ট টাকা দিলে দ্রুত বিল তৈরি হয়। এ কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রেন লাইটিং কর্মচারি হেফজুর রহমান। তিনি মূল বিলটি তৈরি করলেও কর্মচারি মনছুর মিয়া ও মিলনের পৃথক নেপথ্যে নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিল তৈরি করে বিল প্রদানের সময় নানাবিধ অনিয়ম ও টাকা হাতিয়ে নেয়ার কৌশল নির্ধারণ করেন এসব কর্মচারিরা। এতে মূল টাকার ২০ শতাংশ বিল কেটে রেখে কর্মচারিদের মাঝে বিতরণ করা হয়। এতে প্রতি মাসের বিল নিতে আসা উপস্থিত কর্মচারিরা গত মঙ্গলবার উত্তেজিত হলে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আজও এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা শাহ আলমের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এখানে বিতরণ করা বিলের কিছু অংশ উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছেও টাকা ভাগ যায় বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মচারি জানান। তারা বলেন, প্রতিনিয়িত নানাবিধ হয়রানির স্বীকার হচ্ছি। বিভিন্ন লাইন ডিউটি করে টাকা না দিলে ডিউটি থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। আবার অনেকেই ডিউটি না করেও পার্সেন্ট (টাকা) দেয়ার কারণে মাসিক বিলগুলো নিয়মিত পেয়ে যাচ্ছে। প্রতি মাসে টাকা নিচ্ছে এমন কয়েকজনের মধ্যে এসি অপারেটর শাহাবুদ্দিন, এসি অপারেটর আবুল হাশেম, এসি অপারেটর, গোলাম মাওলা, এসি অপারেটর, ইলেকট্রিক ফিটার হানিফসহ অনেকেই। এতে মনছুর ও হেফজুর রহমানসহ চিহ্নিত কয়েকজন জড়িত। তবে বিষয়টি সমঝোতার জন্য এসএসএই শাহ আলম মনিটরিং করছেন বলেও জানা গেছে।
তাছাড়া আরএনবিসহ রেলের কর্মচারিদের সহযোগিতায় সরকারি মালামাল পাচার করে হাজার হাজার টাকা উপঢৌকন ও রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে রেলের।
বিডি প্রতিদিন/২৭ নভেম্বর ২০১৭/হিমেল