২২ মে, ২০১৯ ২১:০১

রাজশাহীতে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যুবলীগ সভাপতির হামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীতে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যুবলীগ সভাপতির হামলা

সিরিয়াল দিতে দেরি হওয়ায় দলবলসহ রাজশাহী নগরীর এক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভাঙচুর ও কর্মচারীদের মারধর করেছেন জেলা যুবলীগের সভাপতি আবু সালেহ। বিষয়টি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার রাতে নগরীর লক্ষ্মীপুরস্থ ক্লিনিকের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বেলাল হোসেনের চেম্বারে এ ঘটনা ঘটেছে।

অভিযোগে জানা গেছে, জেলা যুবলীগের সভাপতি আবু সালেহ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চারঘাট এলাকার এক রোগীকে দেখানোর জন্য লক্ষ্মীপুরের এক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বেলাল হোসেনের চেম্বারে পাঠান। এজন্য যুবলীগ নেতা সালেহ চিকিৎসককে ফোনও দেন। ফোন করে চিকিৎসক বেলাল হোসেন কয়েক মিনিট অপেক্ষার জন্য তাকে অনুরোধ করেন। 

ইফতারির ঠিক আগ মুহূর্তে জেলা যুবলীগ সভাপতি ১৪-১৫ সহযোগী নিয়ে নিজেই ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডা. বেলাল হোসেনের চেম্বারে যান। তার রোগীকে কেন বসিয়ে রাখা হয়েছে জানতে চেয়ে নিজেই চেম্বারের বাইরে সিরিয়ালের দায়িত্বে নিয়োজিত চিকিৎসকের কর্মচারী শিমুলকে (৩৪) লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। এক পর্যায়ে শিমুল মেঝেতে লুটিয়ে পড়লে অন্য কর্মচারীরা তাকে রক্ষা করতে ছুটে আসেন। যুবলীগ নেতার সহযোগীরা তাদেরও লাথি কিলঘুষি মারতে থাকেন।

এক পর্যায়ে সালেহ বাইরে থেকে চিকিৎসকের চেম্বারের দরজায় লাথি মারতে থাকেন এবং অকথ্য ভাষায় গালি দেন। কিছুক্ষণ পর সালেহ তার সহযোগীদের নিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজারের চেম্বারে গিয়ে সেখানেও ভাঙচুর চালান। এসময় ম্যানেজার চেম্বারে না থাকায় তার দুই কর্মচারীকে মারধর করেন সালেহ ও তার লোকজন। প্রায় ২৫ মিনিট তাণ্ডব চালিয়ে সহযোগীদের নিয়ে ফিরে যান যুবলীগ নেতা। 

এ বিষয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার শামীম হোসেন বলেন, 'যুবলীগ নেতার তাণ্ডবের সময় পুরো হাসপাতালজুড়ে রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলাকারীরা চলে যাওয়ার পর আহত শিমুলসহ পাঁচজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বিষয়টি রাজশাহীর মেয়রকে আমরা জানিয়ে বিচার দাবি করেছি।'

শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বেলাল হোসেন বুধবার দুপুরে বলেন, 'এতো বড় একজন যুব নেতা নিজেই এমন একটা হামলার ঘটনা ঘটাল এটা ভাবা যায় না।' 

তিনি বলেন, 'তার সুপারিশ করা রোগীকে আগে কয়েকবার দেখা হয়েছে। চেম্বারের ভেতরে কয়েকজন শিশু রোগী থাকায় যুবলীগ নেতার রোগীকে মাত্র ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে অনুরোধ করা হয়েছিল। হামলার সময় তার রোগী চেম্বারের ভেতরে ছিলেন। এরইমধ্যে উনি দলবল নিয়ে ক্লিনিকে এসে পড়েন এবং এসব তুলকালাম কাণ্ড ঘটান।'

রাজশাহী জেলা যুবলীগের সভাপতি আবু সালেহ জানান, তিনি এমন কোনো হামলার ঘটনা ঘটাননি। দ্রুত তার রোগীকে দেখতে অনুরোধ করেছেন মাত্র। 

রাজশাহী রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান জানান, ঘটনাটি শুনেছি। তবে এ ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিডি প্রতিদিন/২২ মে ২০১৯/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর