রাজশাহীতে ট্রাকের ধাক্কায় চাপা পড়ে কলেজছাত্র ফিরোজ সরদারের (২৫) ডান হাত কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় মহানগরীর উপকণ্ঠ কাটাখালী এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ফিরোজ আলী রাজশাহী কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার নামুগ্রামে তার বাড়ি। ফিরোজের বাবার নাম মাহফুজার সরদার। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চিকিৎসক বলছেন, তার হাত আর জোড়া দেয়া সম্ভব নয়।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এনামু হক জানান, ফিরোজের অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে রাত সাড়ে ১০টায়। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তবে অবস্থা এখন স্থিতিশীল।
ফিরোজের পাশের যাত্রী বীরেশ্বর চন্দ্র প্রামাণিক জানান, একই বাসে চড়ে তারা আসছিলেন। কাটাখালী এলাকায় আসার পর বাসের পাশ দিয়ে একটি ট্রাক যাওয়ার সময় বিকট শব্দ হয়। এসময় যাত্রীরা চিৎকার শুরু করেন ‘হাত গেলো’ বলে। তিনি সামনে ছিলেন। পেছনে গিয়ে দেখেন ওই যাত্রীর ডান হাত কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আসনে বসে থাকলেও ফিরোজের হাত জানালার বাইরে ছিল। এতেই হাতটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
নগরীর কাটাখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, হাতটি নিচে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে ফোন করেন। এরপর দ্রুত সেখানে গিয়ে হাতটি উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ট্রাকটি চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
ওসি আরও জানান, দুর্ঘটনার পর ফিরোজকে নিয়ে বাস টার্মিনালেই চলে যায়। সেখান থেকে তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ফিরোজের বাবা মাহফুজার সরদার জানান, রাজশাহী কলেজে তার মাস্টার্স পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষার ছুটিতে ফিরোজ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা দেয়ার জন্য বাড়িতে গিয়েছিলেন। শুক্রবার পরীক্ষা দিয়েই তিনি রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। আগামী রবিবার কলেজের তার পরীক্ষা আছে। গত ২২ জুন থেকে এই পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
খবর পেয়ে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান হাসপাতালে ছুটে যান। তিনি নিশ্চিত করেন যে ছেলেটি তার কলেজের মাস্টার্সের ছাত্র। তিনি বলেন, যানবাহনগুলোর বেপরোয়া চলাচলের কারণে একটি ছাত্রের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে গেল। কতটা দূরত্ব রেখে যানবাহন চলাচল করা উচিত, সেটি কেউ মানছে না বলেই দুর্ঘটনা এড়ানো যাচ্ছে না। তিনি ট্রাক চালকের শাস্তি দাবি করেন।
বিডি প্রতিদিন/২৮ জুন, ২০১৯/হিমেল/আরাফাত