সাভারের আশুলিয়ায় চলন্ত বাসে এক নারী শ্রমিক (২৫) গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এঘটনায় সাভার হাইওয়ে থানা পুলিশ ছয়জনকে আটক করে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোর্পদ করেছে। চলন্ত বাসে নারী শ্রমিককে গণধর্ষণের ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। শুক্রবার গভীর রাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের আশুলিয়ার বিশমাইল নবীনগর এলাকার মাঝে ডিসি নার্সারীর সামনে এ গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজ্জাদ করিম বলেন, গতকাল নায়ারণগঞ্জ এর চাষাড়া থেকে এক নারী শ্রমিক মানিকগঞ্জে তার বোনের বাড়িতে বেড়াতে আসে। পরে ওই নারী শ্রমিক মানিকগঞ্জ থেকে নায়ারণগঞ্জ যাওয়ার জন্য একটি বাসে করে আশুলিয়ার নবীনগর আসেন। পরে ওই নারী নবীনগরে তার এক পূর্ব পরিচিত ভাইয়ের সাথে একটি মিনি বাসে উঠেন টঙ্গী যাওয়ার জন্য। পরে বাসের চালক টঙ্গী না গিয়ে গাড়িতে থাকা অন্য যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে বিশমাইল নবীনগর এর মাঝে ডিসি নার্সারীর সামনে নিয়ে ওই নারীর সাথে থাকা যুবককে গাড়িতে হাত পা বেধে রেখে গাড়িতে থাকা ড্রাইভারসহ ছয়জন মিলে তাকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করেন। এসময় গণধর্ষণের শিকার ওই নারী চিৎকার দিলে মহাসড়কে টহলরত সাভার হাইওয়ে পুলিশ ওই গাড়িটি আটক করে সেই সাথে ছয়জন ধর্ষণকারীকেও আটক করে ওই নারীকেও উদ্ধার করে। পরে সকালে ছয়জন ধর্ষণকারীকে সাভার হাইওয়ে থানা পুলিশ আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন।
ধর্ষণের শিকার ওই নারী শ্রমিক ছয়জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ গণধর্ষণের শিকার নারীকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করেছে।
গ্রেফতাররা হলেন- ঢাকার তুরাগ থানার গুলবাগ ইন্দ্রপুর ভাসমান গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে আরিয়ান (২০), কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার তারাগুনা এলাকার মৃত আতিয়ারের ছেলে সাজু (২১), বগুড়ার ধুনট থানার খাটিয়ামারি এলাকার সুলতান মিয়ার ছেলে সুমন (২৫), নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার ধামঘর এলাকার জহুর উদ্দিনের ছেলে মনোয়ার (২৪) ও বগুড়ার ধুনট থানার খাটিয়ামারি এলাকার তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে সোহাগ (২৫) এবং বগুড়ার ধুপচাচিয়া থানার জিয়ানগর গ্রামের সামছুলের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৪০)। তারা সবাই তুরাগ থানার কামারপারা ভাসমান এলাকায় ভাড়া থেকে আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল-নবীনগর মহাসড়কে মিনিবাস চালাত। দুপুরে আসামিদের ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলা উত্তর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুল্লাহিল কাফী।
তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গ্রেপ্তার ছয়জনকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন পুলিশ। শুনানি শেষে বিচারক ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গণধর্ষণের শিকার ওই নারী নারায়নগঞ্জের রুপগঞ্জ এলাকায় একটি তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। তার বাড়ি লালমনিরহাট জেলায় বলে জানিয়েছে পুলিশ। এছাড়া গত দুই দিনে সাভার ও ঢাকার ধামরাইয়ে এক শিশুসহ দুইজন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল