রাজশাহীতে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টার অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে মহানগরীতে মসজিদ ভাঙচুর হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে সাম্প্রদায়িক বিষয়ে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ আছে।
শুক্রবার ভোরে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে দেশী অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। এছাড়া ঘটনার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ভিডিও ফুটেজও জব্দ করা হয়েছে।
রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারন চন্দ্র বর্মন শুক্রবার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আসামিদের শনাক্তের পর শুক্রবার ভোরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানের সময় রাজপাড়া এলাকার ডাবতলা এলাকা থেকে আসামি মনিরুল ইসলাম সুমনকে (৪০) আটক করা হয়। পরে মহানগরীর সাহেববাজার এলাকা থেকে অপর আসামি রেজাকে (৩৫) আটক করে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে দেশী ধারালো অস্ত্রশস্ত্র (রামদা ও হাঁসুয়া) উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ জব্দ করা হয়।
ওসি নিরবারন চন্দ্র বর্মন আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশকে জানিয়েছেন, মিথ্যা সংবাদ ফেসবুকে প্রচার ও মাইকিং করে তারা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করেছিল। সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান ওসি।
এর আগে, গত ১৭ জুন রাতে বোয়ালিয়া মডেল থানার হেতেমখাঁ লিচু বাগান এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কতিপয় ব্যক্তি উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মসজিদ ভাঙচুরের মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে। এছাড়াও ধর্মপ্রাণ মুসলিম ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে এমন মিথ্যা সংবাদ মাইকে ঘোষণা করে এবং সম্প্রাদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা করে।
এ ঘটনায় বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি নিবারন চন্দ্র বর্মন বিপুল সংখ্যক পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। পরে স্থানীয় জনগণ, জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় ওই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ঘটানোর অপচেষ্টা প্রতিহত করে। এ ঘটনায় বোয়ালিয়া মডেল থানায় নিয়মিত মামলা করা হয়।
মামলা পর বোয়ালিয়া থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইফতেখার মোহাম্মদ আল আমিন ও আরএমপি সাইবার ক্রাইম ইউনিট ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ নিয়ে সেই দিনের লাইভ ভিডিও পর্যালোচনা ও তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষণপূর্বক আসামিদের শনাক্ত করেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন